উপাচার্যের পদ পাওয়ার আশাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি করছেন রেজিস্ট্রার, দাবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের

উপাচার্য সাধন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে শিক্ষক-অশিক্ষক-পড়ুয়াদের লাগাতার বিক্ষোভের জেরে আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যত শিকেয় উঠেছে পঠন-পাঠন। তবে উপাচার্যের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উঠেছে তা মানতে নারাজ সাধন চক্রবর্তী স্বয়ং। পাশাপাশি তিনি স্পষ্ট ভাষাতে এও জানিয়েছেন. সরকার না চাইলে তিনি পদত্যাগ করবেন না। একইসঙ্গে তিনি এও জানান, রেজিস্ট্রারের সুপ্ত বাসনা রয়েছে সাধনবাবুকে উপাচার্যের পদ থেকে সরিয়ে দেওযা হলে রেজিস্ট্রার ওই পদ নেবেন।
ঘটনার সূত্রপাত ১০ মার্চের যে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছিল সরকারি কর্মীদের যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের পক্ষ থেকে। এরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজস্ট্রারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সেই ধর্মঘটে অনুপস্থিত কর্মীদের সরকারি নির্দেশনামা উপেক্ষা করে পুরো বেতন দিয়ে দিয়েছেন ও সেদিনকার অ্যাটেনডেন্স রেজিস্টার অর্থ মন্ত্রকে পাঠাতেও অসহযোগিতা করছেন। এই অভিযোগ তুলে রেজিস্ট্রারকে চাকরি থেকে বরখাস্তের নোটিস দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডক্টর সাধন চক্রবর্তী। এরপর থেকে সংঘাত বাধে উপাচার্য বনাম রেজিস্ট্রারের। আর এই ইস্যুতেই কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রেজিস্ট্রারকে বরখাস্তের পরই উপাচার্য ডঃ সাধন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীদের একাংশ। আর রেজিস্ট্রারকে বরখাস্ত কেন করেছেন সেই প্রসঙ্গে শনিবার সাধনবাবু জানান, ‘সরকারি অর্ডার ছিল যে ১০ মার্চ হাজিরা দিতেই হবে। যাঁরা আসছেন না তাঁদের শোকজ করতে হবে। আমি সেই নথি সজলবাবুর কাছ থেকে চেয়েছি। কিন্তু নথি তুলে দেননি। এবার ২৪ তারিখের মধ্যে আমায় রিপোর্ট জমা দিতে হত। কারা কারা অফিসে এসেছেন বা আসেননি সেই নথি যদি উনি আমায় না জমা দেন তাহলে রিপোর্ট পাঠানো সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে একাধিকবার অনুরোধও করা হয় ওঁনাকে। তাতেও কাজ না হওয়ায় বাধ্য হয়ে অপসারিত করার পদক্ষেপ নিতে হয়েছে।’ বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগাতার বিক্ষোভ নিয়ে মুখ খোলেন উপাচার্য। বলেন, ‘আমায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পড়াশোনার খুবই অসুবিধা হচ্ছে। ওখানে ত্রাসের সঞ্চার হয়েছেন। যাঁরাই কাজ করতে চান তাঁদের কাজ করতে দেন না। সবাইকে ধরনা মঞ্চে গিয়ে বসে থাকতে হবে। ভিসি দায়ি বলে দেওয়া সহজ। কিন্তু কেন ভিসি দায়ী সে ব্যাপারে কোনও প্রমাণ দিতে পারবে না। তকমা দিয়ে দেওযা হচ্ছে আমি দুর্নীতিগ্রস্ত।’
শুধু তাই নয়, এই প্রসঙ্গে, অতীতের কথা টেনে সাধনবাবু এও জানান, ‘উনি ২০১৪ সাল থেকে রয়েছেন। বহুবার সমস্যা তৈরি করেছেন। কয়েকজন শিক্ষক-পড়ুয়াদের নিয়ে সমস্যা তৈরি করছে আমি যাতে চলে যাই। আসলে ওনার সুপ্ত বাসনা রয়েছে, আমাকে সরিয়ে দেওয়া হলে উনি উপাচার্য পদে বসবেন। উনি শিক্ষকদের মধ্যে জানিয়েছেন, যে এই উপাচার্যকে সরিয়ে দিলে আপনাদের মনের ইচ্ছা পূরণ হবে। তারমধ্যে এটাও রয়েছে যে শিক্ষকরা যখন খুশি আসবেন, আবার চলে যাবে। হাজিরা দিতে হবে না।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 1 =