‘বাড়িতে যদি পুলিশ আসে যতক্ষণ না তারা কাগজ দেখাচ্ছেন, অ্যারেস্ট মেমোতে সই করাচ্ছেন ততক্ষণ প্রশ্ন করতে হবে। পুলিশ দেখলে ভয় পেলে চলবে না। এই স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হলে সচেতন হতে হবে। বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলতে হবে।’ হঠাৎ পুলিশ গ্রেপ্তার করতে এলে এমনই পদক্ষেপ নেওযা জরুরি বলে জানালেন কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচি। একই সঙ্গে তিনি এও দাবি করেন, বিরোধীদের মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এরই রেশ টেনে কৌস্তভ এও জানান, ‘পশ্চিমবঙ্গের জেলের ভিতর গেলে দেখা যাবে কত বিরোধী দলের লোকেদের মিথ্যে গাজার মামলা, ডাকাতি মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। এখন নতুন ট্রেন্ড শুরু হয়েছে পকসো আইনে ফাঁসিয়ে দেওয়া। এই বিষয়গুলিতে পশ্চিমবঙ্গের একটা সংখ্যার মানুষ মারাত্মক ভাবে জেলে বন্দি হয়ে পড়ে রয়েছেন।’ একই কথা শোনা গেছে আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির গলাতেও। তিনিও জানান, ‘জেলে গিলে বোঝা যাবে কীভাবে মানুষকে ভুল পথে পরিচলিত করা হচ্ছে। এমন-এমন মিথ্যে মামলা দিয়েছে পুলিশ যার সর্বোচ্চ সাজা পাঁচ বছর হতে পারে। বিরোধী দল করার জন্য ছ’বছর অস্বাভাবিক সব মামলায় ফাঁসিয়ে দিচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, শনিবার ভোর-রাতে গ্রেপ্তার করা হয় এই আইনজীবী কৌস্তভ বাগচিকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের প্রতিবাদ করেছিলেন কৌস্তভ, সেই কারণেই যে তাঁকে এই গ্রেপ্তার তা স্পষ্ট ভাষাতেই জানিয়েছেন কৌস্তভও। এরপর শনিবার বিকেলেই ১ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পান কৌস্তভ।
কৌস্তভের এই গ্রেপ্তারি প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও সোচ্চার হন। বলেন, ‘সম্প্রতি দুর্নীতি ও স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে যে কটি যুব কণ্ঠ সোচ্চার হয়েছে তার মধ্যে কৌস্তভ অন্যতম। ব্যক্তিগতভাবে ও আমার ভাইয়ের মতো। লড়াকু ও অত্যন্ত উজ্জ্বল ভবিষ্যতের একটা ছেলে। ওর এই প্রতিবাদী লড়াইকে আমি সমর্থন করি। একজন কলকাতা হাই কোর্টের বিশিষ্ট তরুণ আইনজীবীর বাড়িতে যে কায়দায় রাত তিনটের সময় পুলিশ হানা দিয়েছে তার প্রতিবাদ হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।’
এদিকে আবার অপরদিকে, পুলিশ দিয়ে কৌস্তভ বাগচিকে গ্রেপ্তার করা ঠিক হল না বলে মন্তব্য করেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর দাবি, কৌস্তভ অন্যায় করেছেন, ‘মাতৃসমা’ মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে ওই চরম কুৎসা বরদাস্ত করা যায় না। তবে কুণালের মতে, পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তারের সিদ্ধান্ত সঠিক নয়। এই প্রসঙ্গে তিনি এও জানান, ‘আমাদের ছাত্রযুবরা কৌস্তভের অসভ্যতা বুঝে নিতে পারত। পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করা ঠিক হল না।’