কল্পতরু উৎসবে পুণ্যার্থীদের ঢল কাশীপুর থেকে দক্ষিণেশ্বরে

কল্পতরু উৎসব পালিত হল দক্ষিণেশ্বর থেকে শুরু করে কাশীপুর, জয়রামবাটি, কামারপুকুর মঠ ও মিশনে। ১৮৮৬ সালের ১ জানুয়ারি অবতারে অবতীর্ণ হন ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। মানুষের বিশ্বাস, কল্পতরু উৎসবের দিন পরমহংস দেবের কাছে মন থেকে চাইলে সেই ইচ্ছা পূরণ হয়। তারপর থেকেই এই দিনটিতে ‘কল্পতরু উৎসব’ উদযাপিত হয় বঙ্গের নানা জায়গায়।

‘কল্পতরু উৎসব’কে কেন্দ্র করে ভক্তদের ঢল নামে কাশীপুর উদ্যান বাটিতেও। এদিকে গত দু’বছর কোভিডের কারণে ভক্ত প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এ বছর ফের পুরনো ছন্দে ফিরল কাশীপুর উদ্যান বাটি। তবে মাস্ক ছাড়া প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি এদিন কাউকেউ। স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার ভোররাত থেকেই উদ্যানবাটির গেটের সামনে লাইন পড়ে যায় পুণ্যার্থীদের। বিরাট লাইন কাশীপুর ডাকাত কালীবাড়ি পেরিয়ে গোপাল চ্যাটার্জি রোড ধরে পৌঁছে যায় রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত।

এদিকে রবিবার সকাল থেকেই জয়রামবাটি মাতৃ মন্দিরেও কল্পতরু উৎসব উপলক্ষে ভক্তদের ঢল নামে। মাতৃমন্দিরে চলে বিশেষ মঙ্গলারতি, পূজা পাঠ সহ ছিল আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠান। মাতৃমন্দিরে দিনভর চলে হোম-যজ্ঞ ও পুজোপাঠ। রীতি মেনেই কল্পতরু উৎসব পালন হুগলির কামারপুকুর মঠ ও মিশনে। ১ জানুয়ারি কল্পতরু উৎসবে বিশেষ পুজোপাঠ হয় কামারপুকুর মঠ ও মিশনে। এই কল্পতরু উৎসব উপলক্ষে সকাল থেকেই ভিড় নজরে আসে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ দেবের স্মৃতিবিজড়িত হুগলি জেলার অন্যতন তীর্থক্ষেত্র কামারপুকুর মঠ ও মিশনে। কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী লোকোত্তরানন্দজী মহারাজ জানান, ১ জানুয়ারি, ২০২৩ সাল। এই দিনটি সাধু ও ভক্তবৃন্দের কাছে বিশেষ দিন। এই দিনটিতে ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণদেব কাশীপুর উদ্যানবাটিতে কল্পতরু হয়েছিলেন। এই সময় এমন একটা ভাব ধারণ করেছিলেন, যে যা প্রার্থনা করেছিলেন, ধর্ম, অর্থ, কাম ও মোক্ষ, সবই তিনি দান করেছিলেন। স্বামী সারদানন্দজী মহারাজএদিনের কল্পতরু উৎসব সম্পর্কে জানান, ‘শ্রী রামকৃষ্ণ দেব আত্মপ্রকাশে অভয় প্রদান করেছিলেন। নিজেকে সকলের কাছে প্রকাশ করে দিয়েছিলেন। জীবজন্তু সহ সকল মানুষকে তিনি অভয় প্রদান করেছিলেন। কেবল এই দিনটিই নয়, সারা বছর ধরেই আমাদের কাছে কল্পতরু হিসেবে তিনি বিরাজমান। আমাদেরকে তিনি আশীর্বাদ করে যাচ্ছেন, অভয় প্রদান করে যাচ্ছেন। ধর্ম, অর্থ, মুক্তি সমস্তই দান করে যাচ্ছেন। তাই কামারপুকুর মাঠে আমরা এই দিনটি পালন করছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − fourteen =