তদন্তকারী আধিকারিককে আইনের ধারা পড়ার নির্দেশ বিচারপতির

নজিরবিহীন ঘটনা কলকাতা হাইকোর্টে। রাজ্য পুলিশের তদন্তকারী আধিকারিককে জোরে জোরে আইনের ধারা পড়ার নির্দেশ বিচারপতির। প্রসঙ্গত, এক ইউ-টিউব সঞ্চালকের বিরুদ্ধে ভুল ধারায় মামলা করায় বুধবার এই নির্দেশ দেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। আদালত সূত্রে খবর, এক ইউটিউব সঞ্চালককে তাঁর পরিবেশনায় ‘জল্লাদ’ শব্দ ব্যবহার করায় ধর্মীয় ভাবাবেগ ওউস্কানিমূলক শব্দ ব্যবহার করার কারণে সন্দেশখালি থানায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়।

একইসঙ্গে ওই ইউটিউবারের বিরুদ্ধে মানহানি বা সম্প্রীতি নষ্টের অভিযোগ আনা হয়। এরপৎই তলব করা হয় এক ইউটিউব চ্যানেলের সঞ্চলককে। কিন্তু আইপিসি ৫০৫/ ৩ ধারা অনুযায়ী ‘জল্লাদ’ শব্দ প্রয়োগের জন্য কোনও সম্প্রীতি নষ্ট বা ধর্মীয় ক্ষেত্রে উস্কানির মতো ঘটনায় অভিযুক্ত কাউকে অভিযুক্ত করা যায় না বলে মনে করছে আদালত। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত এজলাসে উপস্থিত আইও কে ডেকে আইনের ওই ধারা জোরে জোরে পড়ার নির্দেশ দেন। মৃদু হেসে বিচারপতির কথায়, ‘আগে নিশ্চয় ধারা না পড়েই উনি এফআইআর করে ফেলেছেন।’ আইও জোরে জোরে পড়ার পর মামলাকারির আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়কে পুলিশের তদন্ত রিপোর্টে আপত্তি জানিয়ে লিখিত দেওয়ার নির্দেশ দেন। আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওই সঞ্চালকের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না পুলিশ বলে জানায় আদালত।

সূত্রে খবর, ওই ইউটিউবার একটি বিশেষ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন তাঁর নিজস্ব চ্যানেলে। একটি বিশেষ অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয় ওই চ্যানেলে। সেখানে কিছু শব্দ পেশ করা হয় ওই অনুষ্ঠানের মধ্যে। এরপরই এই অনুষ্ঠানে কিছু শব্দ আপত্তিকর এবং ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়া হয়েছে বলে থানায় অভিযোগ জানানো হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই মামলা সাজায় পুলিশ। তবে কোন শব্দ ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোন ধারা প্রয়োগ করা উচিত তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। বিষয়টি লক্ষ্য করেই ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি। এরপরই নির্দিষ্ট শব্দটি ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্ট আইনি ধারা যে প্রয়োগ করা যায় না, সে বিষয়ে জানানো হয় আদালতের তরফে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen − fourteen =