গত ১৯ অগাস্ট যে দিন শুভেন্দু অধিকারীর সভা করার কথা ছিল, তার আগের দিনই খেজুরিতে জারি হয় ১৪৪ ধারা! এবার খেজুরির মহকুমা শাসকের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলতে দেখা গেল খোদ বিচারপতি জয় সেনগুপ্তকে।এই প্রসঙ্গ টেনে ‘বিরোধীদের আটকাতে বাচ্চাদের মতো যুদ্ধ করা যায় না’ বলে মন্তব্যও করেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। এদিকে আদালত এবং বিজেপি সূত্রে খবর, বারবার সভা করার ক্ষেত্রে বাধা পেয়েই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। সেই মামলায় রাজ্যকে ভর্ৎসনা করার পাশাপাশি সভার অনুমতিও দিল আদালত। পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে সেই সভা হবে আগামী ২৬ অগাস্ট। পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি পাওয়া না গেলেও আদালতে মিলল অনুমতি।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ আগস্ট খেজুরিতে সভা করার কথা ছিল শুভেন্দুর। সভার অনুমতিও পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এর ঠিক একদিন আগে অর্থাৎ ১৮ তারিখেই জারি হয় ১৪৪ ধারা। এরপর ঠিক হয়, ২৬ অগস্ট সভা হবে। কিন্তু এবার আর মেলেনি পুলিশের অনুমতি। এরপরই মামলা করার সিদ্ধান্ত নেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। কাঁথি মহকুমা প্রশাসনের যুক্তি ছিল, বোর্ড গঠন ঘিরে ওই অঞ্চলে অশান্তি হয়েছে। পরবর্তী বোর্ড গঠনে যাতে অশান্তি না হয়, তার জন্য নাকি জারি করা হয়েছিল ১৪৪ ধারা।
বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানিতেবিচারপতি সেনগুপ্ত জানান, ১৪৪ ধারা জারি করার ক্ষেত্রে সঠিক আইন মানা হয়নি।বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, কোনও পূর্ব কারণ না দেখিয়েই ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। ১৪৪ ধারা জারির ক্ষেত্রে আইনে যে সব অবস্থার কথা বলা আছে, এ ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি বলেও পর্যবেক্ষণে জানায় আদালত। ১৪৪ ধারার জারির মতো কোনও পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল বলেও মনে করছে না আদালত। এসডিও-র জারি করা নির্দেশ খারিজ করে সভার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে বিচারপতি এও জানান, সভার আগের দিন ১৪৪ ধারা জারি করাতেই প্রশ্ন উঠেছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী এভাবে ১৪৪ ধারা জারি করা যায় না। কাউকে আটকানোর জন্য এটা করা হচ্ছে বলে মনে হওয়া স্বাভাবিক। এর ফলে খারাপ ধারণা তৈরি হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতি। এরপরই আগামী ২৬ অগাস্ট দুপুর ২ টো থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত সভা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশ, সভায় কোনও উস্কানিমূলক মন্তব্য করা যাবে না, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার।