সোমবার সবার নজরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস

সোমবার সবার নজরে কলকাতা হাইকোর্ট। সে রাজনৈতিক দলই হোক বা আমজনতা সবাই তাকিয়ে আছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের এজলাসের দিকে। আদতে কটা মামলা সরানো হচ্ছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে তা জানতেই মুখিয়ে রয়েছেন সবাই। কারণ, সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে শুক্রবার যে নির্দেশ দেওয়া হয় তারপর থেকেই সবার ফোকাস পয়েন্টে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস। কারণ, অভিষেক সংক্রান্ত মামলা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চ থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। ওই মামলা শুনবেন অন্য কোনও বিচারপতি। পাশাপাশি আরও একটি মামলা সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় শীর্ষ আদালতের তরফের থেকে। এদিকে ওই নির্দেশ দেখার পর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় শুক্রবার হাইকোর্ট ছেড়ে যাওয়ার সময় জানিয়েছিলেন সম্ভবত তাঁর কাছ থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে সবক’টি দুর্নীতির মামলাই।
এদিকে সোমবার হাইকোর্টে কোন কোন মামলা উঠবে, সেই তালিকা প্রকাশিত হয় শনিবার সন্ধেয়। সেই তালিকা বলছে, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে যে যে মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল, সেগুলি এখনও পর্যন্ত সরানো হয়নি। অর্থাৎ, এখনও পর্যন্ত শুনানিতে কোনও বদল হয়নি। সোমবারের সবক’টি মামলাই শুনবেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। যদিও তালিকা পরবর্তীতে বদল হওয়ার সম্ভাবনাও যে নেই তা নয়। তবে এক্ষেত্রে সোমবারই গোটা বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা।
শনিবারের পর থেকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের বেঞ্চের শুনানি প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের কথা প্রকাশ্যে এসেছে, তখন থেকেই বঙ্গ রাজনীতিতে শোরগোল পড়েছে। এদিকে ধর্মতলায় আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে এক হতাশার দৃশ্য স্পষ্ট। রাজনীতিকদের মধ্যেও দেখা গিয়েছে এক মিশ্র প্রতিক্রিয়া। যেমন, তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে স্বাগত জানালেও বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীও যা বলেছেন তাঁর মর্মার্থ করলে দাঁড়ায় এই রায় দুর্ভাগ্যজনক। এমনকী সুপ্রিম কোর্টের এই রায় নিয়ে মুখ খুলতে দেখা যায় প্রাক্তন বিচারপতিদেরও।
এদিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ প্রকাশ্যে আসার পর গতকালই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় শীর্ষ আদালতের সেক্রেটারি জেনারেলের থেকে তাঁর দেওয়া ইন্টারভিউয়ের অফিশিয়াল ট্রান্সলেশন এবং রেজিস্ট্রার জেনারেলের হলফনামা চেয়ে পাঠিয়েছিলেন। গতকাল রাত ১২টার মধ্যে সেটি পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। সেই নথির জন্য শনিবার রাত ১২ টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত হাইকোর্টে নিজের চেম্বারে অপেক্ষা করবেন বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সেই নির্দেশের উপরেও স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়ের এই নির্দেশের পর শনিবার রাত ৮টায় সুপ্রিম কোর্টে স্পেশাল বেঞ্চ বসে। এরপর সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এ এস বোপান্না এবং বিচারপতি হিমা কোহলির স্পেশাল বেঞ্চ স্থগিতাদেশ দেয় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়ের সেই নির্দেশের ওপর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two + five =