আদালতে মামলা হতেই সামনে চলে এল কলকাতা পুলিশের অপদার্থ কাজকর্মের এক নক্কার ছবি। পরিচারিকাকে মারধরের ঘটনায় কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে যে মামলা করা হয়েছে তা নিয়ে রীতিমতো ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল কলকাতা পুলিশকে। শুধু তাই নয়, কলকাতা পুলিশের ওপর আম-জনতা কেন এবং কী কারণে ভরসা হারাচ্ছেন তাও ধরা পড়ল খোদ বিচারপতির কথায়। একইসঙ্গে এটাও স্পষ্ট করে দিলেন বিচারপতি যে বেশ কিছু অপদার্থ আধিকারিক রয়েছেন কলকাতা পুলিশে।
এক পরিচারিকাকে মাথায় লোহার রড দিয়ে মারা সত্ত্বেও কেন ৩০৭ ধারায় মামলা করা হল না, সেই প্রশ্ন তুললেন হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। যাঁর বাড়িতে ওই পরিচারিকাকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ, তাঁর পরিচয় তিনি প্রাক্তন ক্রিকেটার পঙ্কজ রায়ের নাতি। কলকাতার শ্যামপুকুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। গত ১১ অগাস্টের ঘটনা। তদন্তে কী অগ্রগতি হল, সে বিষয়ে সোমবার রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সোমবার রিপোর্ট দেখার পর পুলিশকে রীতিমতো ভর্ৎসনা করেন তিনি। বিচারপতি স্পষ্টতই জানান, ‘একজনকে লোহার রড দিয়ে মাথায় মারা হল, অথচ তাতে এত লঘু ধারা!’ সরকারি আইনজীবীকে বিচারপতি সেনগুপ্ত এও বলেন, ‘পুলিশ যা বলছে, সেটাই সবসময় শেষ কথা বলে ধরে নেবেন না। এর পিছনে অনেক কিছু চলে।’ এই ঘটনায় বিচারপতি এও জানতে চান,’মাথায় লোহার রড দিয়ে মারা হল, অথচ ৩০৭ ধারা পর্যন্ত দেওয়া হল না! তারপরেও পুলিশ যা বলবে সেটাই শুনতে হবে? অদ্ভুত!’
লঘু ধারায় কেন মামলা করা হয়েছে, সেই প্রশ্ন আগেই তুলেছিলেন বিচারপতি। আগের শুনানিতে নির্দেশ দেওয়ার পরও সেই ধারা কে যুক্ত হল না, বদলে কেন পাল্টা যুক্তি দেওয়া হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুলে সোমবার ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। ক্ষুব্ধ বিচারপতি আরও বলেন, ‘কোথা থেকে এই সব অফিসারদের ধরে এনেছেন? একজন ডিসি-র নজরদারিতে তদন্তের কথা থাকা সত্ত্বেও কী করে এই অবস্থা!’ মঙ্গলবারই রাজ্যকে এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য জানাতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মূল অভিযোগ, পঙ্কজ রায়ের নাতি পুস্কর ও রায় ও পুত্রবধূ মিতা রায়-এর বিরুদ্ধে। তাঁদের বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে গত ১১ অগস্ট। পরিচারিকার দাবি, তাঁর মাথায় লোহার রড দিয়ে মারা হয়েছে।