বেসরকারি স্কুলের অস্বাভাবিবক ফি নিয়ে ফের ভর্ৎসনা করতে দেখা গেল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুকে। মঙ্গলবার তিনি বেশ কড়া সুরেই বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষদের জানান, ছাত্রছাত্রীদের জন্য শিক্ষা বিক্রয়যোগ্য পণ্য হতে পারে না। প্রসঙ্গত, রাজ্যের বেসরকারি স্কুলগুলির ইচ্ছেমতো ফি বৃদ্ধি নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে অসন্তোষ রয়েছে। এই অবস্থায় মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে মন্তব্য বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু বলেন, বেসরকারি স্কুলগুলি যেমন খুশি ফি নিতে পারে না পড়ুয়াদের কাছ থেকে। এর আগের শুনানিতে বিচারপতি বেসরকারি স্কুলগুলিকে ভর্ৎসনা করে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘স্কুল তো মিষ্টির দোকান নয় যে, ইচ্ছেমতো ফি নেবে।’এরই পাশাপাশি বিচারপতি বসুর মত, ‘বেসরকারি স্কুলগুলির উপর রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ থাকা জরুরি। বেসরকারি স্কুলে ফি কেমন হবে তা রাজ্য সরাসরি ঠিক করে দিতে পারে না। কিন্তু কোথাও তো বলা নেই, বেসরকারি স্কুলগুলির উপর রাজ্যের কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। বেসরকারি স্কুলের ফি বৃদ্ধি নিয়ে রাজ্যের কোনও বক্তব্য থাকবে কী থাকবে না, এই প্রশ্ন বিবেচনায় এনে সুষ্ঠু সমাধান চায় আদালত।’ এরই পাশাপাশি রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলকে মামলায় সওয়ালের জন্য অনুরোধ জানান বিচারপতি।এদিকে আদালত সূত্রে খবর, ২১ জুন মামলার পরবর্তী শুনানি।
প্রসঙ্গত, শহরের দু’তিনটি নাম করা স্কুলের অস্বভাবিক ফি বৃদ্ধি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয় মামলা। অভিভাবকদের অভিযোগ, কোনও স্কুলে ৫০ শতাংশ ফি বৃদ্ধি করেছে। আবার কোনও স্কুলে ১০০ শতাংশ বৃদ্ধ করছে। স্কুলের বেতন দিতে গিয়ে নাজেহাল অভিভাবকরা। এই পরিস্থিতিতে আদালতের দ্বারস্থ হন অভিভাবকরা। কলকাতা হাইকোর্ট আগেই জানিয়েছিল, কী নিয়মে ফি বাড়াতে পারে বেসরকারি স্কুল, তা আগামী শুনানিতে জানাতে হবে সব পক্ষকে। আর রাজ্যের দাবি ছিল, বেসরকারি স্কুলের ফির বৃদ্ধির জন্য রাজ্য সরকারের অনুমতি নিতে হয়, কিন্তু তারা নেয় না, তাই রাজ্যও ফি বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে পারে না। এখানেই বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু পর্যবেক্ষণ, ছাত্রছাত্রীদের জন্য শিক্ষা বিক্রয়যোগ্য পণ্য হতে পারে না। ইচ্ছেমতো টাকার বিনিময় শিক্ষা বিক্রি হতে পারে না।