তুফানগঞ্জ: আদালত অবমাননার মামলাতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ায় আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন জন বার্লা। শনিবার কোচবিহারের তুফানগঞ্জ মহকুমা দায়রা আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। এরপর ৫০০ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পান বার্লা। প্রসঙ্গত, গত ১৫ নভেম্বর মন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে তুফানগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। এরপরই শনিবার সকালে নিজের আইনজীবীদের সঙ্গে নিয়ে তুফানগঞ্জ মহকুমা দায়রা আদালতে আসেন কেন্দ্রীয় এই প্রতিমন্ত্রী। উল্লেখ্য, গত ৪ এপ্রিল প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া বারোকোদালি এলাকায় বাইক ও গাড়ির র্যালি হয়। সরকারিভাবে যার কোনও অনুমতি ছিল না। প্রশাসন সেই র্যালি বন্ধ করে দেয়। এই ঘটনায় তুফানগঞ্জ ব্লক ২ স্পেশ্যাল ইলেকশন অফিসার দেবদুলাল অধিকারী বক্সিরহাট থানায় বিধি লঙ্ঘনের মামলা দায়ের করেন। জন বার্লা, হরেন্দ্রনাথ বর্মা, বিষ্ণু দাস এবং অরুণ পাকাধরার নামে এফআইআর করা হয়। বাকি তিনজন আদালতে হাজিরা দিলেও জন বার্লা নির্ধারিত দিনে উপস্থিত ছিলেন না আদালতে। ১৫ নভেম্বর তাঁকে শেষবার হাজিরা দিতে কড়া নির্দেশ দেয় তুফানগঞ্জ আদালত। তবে তিনি হাজিরা দেননি। সমন রিসিভ করে তাঁর মন্ত্রক। এরপরই তুফানগঞ্জ আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। জামিনের পর এদিন আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, ‘আদালতকে শ্রদ্ধা করি। সংবিধান মেনে চলি। আমি জানতাম না গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। কারণ কোনও নোটিস আমায় দেওয়া হয়নি। আমি সোশ্যাল মিডিয়া মারফত জেনেছি। আজকে এসেছি তাই জামিন নেওয়ার জন্য।’ এরই পাশাপশি শাসকদল তৃণমূলকে বিদ্ধ করে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জন বার্লা জানান,‘একটা র্যালি করা অন্যায়। আর ছাপ্পা ভোট দেওয়া অন্যায় নয়। কয়েকদিন তুফানগঞ্জ পুরসভায় ছাপ্পা ভোট হল। তখন কোনও কেস হয়নি। আর ওটা বাইক র্যালি ছিল না। আমি আসছিলাম। আমার পিছনে বাইক নিয়ে কয়েকজন আসছিল। আসলে আমাকে হেনস্তা করার জন্য এই সকল কেস দেওয়া হচ্ছে।’ তৃণমূল সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে জন বার্লা এদিন এও বলেন, ‘ভাইপো কোম্পানি নদী নালার কন্ট্রাক্ট পাচ্ছে। ভাইপোর নামে টেন্ডার হচ্ছে। তৃণমূলের জন্য সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। এখানে শুধু ক্যাডাররা কাজ পাচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, এই ঘটনার সূত্রপাত, প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে। ২০১৯ সালের ৪ এপ্রিল লোকসভা ভোটে নির্বাচনি বিধি লাগু থাকলেও বিডিও অফিস চত্বরে বাইক ও গাড়ি নিয়ে র্যালি করেছিলেন আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রের তৎকালীন বিজেপি প্রার্থী জন বার্লা ও তাঁর দলীয় কর্মী-সমর্থকরা। এদিকে ওই কর্মসূচির কোনও অনুমতি ছিল না পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে। অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও তিনি মিছিল করায় বসিরহাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে। সেই মামলায় জন বার্লা-সহ মোট চারজনের নাম ছিল। বাকি তিনজন আগেই মুক্তি পান। এরপরগত ১৫ নভেম্বর অর্থাৎ মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীকে আদালতে হাজির হওয়ার সমন পাঠানো হয়। এই সমন পাঠানোর পরও তাঁর আইনজীবী বা জন বার্লা উপস্থিত না হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে তুফানগঞ্জ মহকুমা দায়রা আদালত।