হাওড়া ও কলকাতা: অবিলম্বে চাকরি দিতে হবে। এই দাবিতে সুদূর ফুরফুরা শরীফ থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে মিছিল করে কলকাতার ধর্মতলায় পৌঁছলেন প্রাথমিকের চাকরি প্রার্থীরা। রাতটা অবশ্য তাঁরা হাওড়ার ডোমজুড়ে কাটান। আন্দোলনকারীদের একাংশের দাবি পুলিশি বাধায় হাওড়ায় রাত্রিবাস করতে হয়।
মঙ্গলবার হুগলির ফুরফুরা শরীফ থেকে মিছিল শুরু করেন ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা। মঙ্গলবার বিকেলে মিছিল হুগলি থেকে হাওড়ার ডোমজুড় পৌঁছয়। ডোমজুড়ে রাত কাটিয়ে বুধবার ফের রওনা দিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির প্রতিবাদ ও নিজেদের ন্যায্য চাকরির দাবিতে মিছিলে চাকরিপ্রার্থীদের হাতে ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড ,থার্মোকলের থালা দেখতে পাওয়া যায়। এই ‘লং মার্চ’-এর মিছিল ঘিরে কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করেছে পুলিশ।
প্রাথমিকে নিয়োগের দাবিতে এবার আন্দোলনের সুর আরও চড়িয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। প্রাথমিকে নিয়োগের দাবিতে চাকরিপ্রার্থীদের ‘লং মার্চ’-এর আজ দ্বিতীয়দিন। বুধবার ডোমজুড় থেকে ফের ধর্মতলার উদ্দেশে রওনা দেয় তাঁরা। মঙ্গলবার (গতকাল) দুপুরে হুগলির ফুরফুরা শরিফ থেকে মিছিল শুরু করেন ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণ নন ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীরা। মিছিলে অংশগ্রহণকারী চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, ২০১৪ সালে টেট পাশ করা সত্ত্বেও তাঁদের নিয়োগ হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারেবারে তাঁদের চাকরির প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনও সমস্যার সমাধান হয়নি।
২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণ নন ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীরা এর আগেও বিভিন্নভাবে নিজেদের প্রতিবাদ প্রদর্শন করেছেন। গত বছর সল্টলেকের করুণাময়ীতে সারারাত ধরে তাঁদের অবস্থানও করেছেন। সেই অবস্থান বিক্ষোভকে মধ্যরাতে বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে তাঁদের করুণাময়ী চত্বর থেকে টেনে হিঁচড়ে সেখান থেকে তুলে দিয়েছিল। পরে ধর্মতলায় মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির নীচেও লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণ নন ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীরা। যদিও এত কিছুর পরেও সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলেই দাবি আন্দোলনকারীদের। একান্ত বাধ্য হয়েই রাজ্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এই লং মার্চের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণ নন ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীদের দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হোক।
মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এই লংমার্চ হাওড়ার মাকড়দহ থেকে টিকিয়াপাড়া হয়ে ধর্মতলার উদ্দেশে রওনা দেয়। তাঁদের কর্মসূচি যাতে নবান্নের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সেই সেই কারণেই হাওড়ার এই রুটটিকে তাঁরা বেছে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন চাকরি প্রার্থীরা। বুধবারের এই লং মার্চে সামিল হয়েছেন প্রচুর মহিলা চাকরিপ্রার্থীও। তাঁদের অভিযোগ, মঙ্গলবার রাত প্রায় ১০টার পর একটি শ্মশানঘাটের কাছে পুলিশ তাঁদের থামিয়ে দেয়। আর সেখানেই তাঁদের রাত্রিবাস করতে বাধ্য করা হয়।
মিছিলে পা মেলানো চাকরি প্রার্থী আক্তারুল ইসলাম অভিযোগ করেন তাঁদের সঙ্গে বঞ্চনা করা হয়েছে। তাই এই মিছিল করে তারা ফুরফুরা শরীফ থেকে ধর্মতলা যাচ্ছেন।