ফের জেল হেপাজতে আইএসএফ বিধায়ক, তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই চলবে বার্তা নওশাদের

আবারও ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে ফের জেল হেপাজতের নির্দেশ দিল আদালত। আদালতের নির্দেশ, ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেল হেপাজতেই থাকতে হবে তাঁকে। ধর্মতলা কাণ্ডে নিউ মার্কেট থানার করা মামলায় ৩ দিনের পুলিশ হেফাজত শেষে শনিবার আরও একবার নওশাদকে নগর দায়রা আদালতে পেশ করে পুলিশ। এদিন আদালতে তাঁর আইনজীবী বারংবার জামিনের আর্জি জানালেও এদিন জামিন পাননি ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক। এদিন আবারও নওশাদকে নিজেদের হেফাজতে চেয়েছিল পুলিশ। বিধায়কের আইনজীবী পালটা সওয়াল করেন যে তাঁর মক্কেলের পুলিশি হেপাজতের প্রয়োজন নেই। এদিকে আদালত সূত্রে খবর, পুলিশ নওশাদকে নিজেদের হেফাজতে চাইলেও বিরোধিতা করেন বিধায়কের আইনজীবী। জবাবে কোনও সদর্থক উত্তর দিতে পারেননি সরকার পক্ষের আইনজীবী।

এদিকে এদিন ব্যাঙ্কশাল আদালতে ঢোকার সময় নওশাদ তাঁর দলের সমর্থকদের উদ্দেশে বার্তা দেন, ‘যে লড়াইতে নেমেছে নওশাদ সিদ্দিকি, সেই লড়াই কোনওভাবেই থামবে না। আমার সঙ্গে যা করছে তাঁর উত্তর পঞ্চায়েত ভোটে পাবে শাসকদল।’ একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘একজন বিধায়ককে কিভাবে আটকে রাখা হয়েছে সবাই দেখতে পাচ্ছে। কিন্তু কোনভাবেই লড়াই থামানো যাবে না। লড়াই চলছে এবং চলবে। অনেক মামলাই দেবে আমার বিরুদ্ধে। কিন্তু সবাই দেখতে পাচ্ছে কি হচ্ছে। নওশাদ সিদ্দিকি থেমে থাকবে না।‘

দিনটা ছিল একুশে জানুয়ারি। ভাঙড়ে আইএসএফ-তৃণমূল সংঘর্ষের রেশ এসে পড়েছিল শহর কলকাতাতে। সেই দিন দুপুরের পর থেকে পুলিশ-আইএসএফ কর্মী-সমর্থকদের খণ্ডযুদ্ধে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ধর্মতলা চত্বর। গ্রেপ্তার করা হয়েছিল নওশাদ-সহ ১৮ জন আইএসএফ কর্মী সমর্থককে। এরপর থেকে জেলেই দিন কাটছে আইএসএফ বিধায়কের। মুক্তির কোনও নাম নেই। আইনজীবীর তরফে লাগাতার জামিনের আবেদন জানানো হলেও বারবার তা খারিজ হয়ে যাচ্ছে আদালতে। নওশাদের মুক্তির দাবিতে দলের কর্মী-সমর্থকরা পথেও নেমেছেন। সুর চড়িয়েছে বামেরাও। অন্যদিকে নওশাদের মুক্তির দাবিতে কলকাতার রাজপথে মিছিল করে বাম-আইএসএফ। জেলে আটকে নওশাদকে মন্ত্রিত্বের টোপ দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। পালটা নওশাদ ও আইএসএফের বিজেপি যোগ নিয়ে আক্রমণ করেছে তৃণমূল। সাংবাদিক বৈঠক করে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম আগেই জানিয়েছেন, নওশাদের সঙ্গে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের হোয়াটস্যাপে কথা হয়েছে এবং তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের প্রমাণ পুলিশ পেয়েছে।

প্রসঙ্গত, একুশের ঘটনার পর  কলকাতার পৃথক তিনটি থানাতে নওশাদের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা হয়। মামলা হয়েছে হেয়ার স্ট্রিট থানায়, মামলা হয় নিউমার্কেট থানাতেও। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি নওশাদকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়েছিল। করা হয়েছিল জামিনের আবেদন। সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল আদালত। হেয়ার স্ট্রিট থানার করা মামলায় তাঁর ১৪ দিনের জেল হেপাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। অন্যদিকে নিউমার্কেট থানায় নওশাদ সিদ্দিকির বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছিল সেই মামলায় নওশাদকে হেপাজতে চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছিল পুলিশের তরফে। পুলিশের সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাঁর পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। সেই মেয়াদ শেষ হয় শনিবার। সে কারণেই এদিন ফের তাঁকে তোলা হয় ব্যাঙ্কশাল আদালতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three + 3 =