ঘটনার চারদিন পর আত্মসমর্পণ জয়ন্ত সিংয়ের

আড়িয়াদহতে মা-ছেলেকে মারধরের অভিযোগে মূল অভিযুক্ত আত্মসমর্পণ করলেন ঘটনার চার দিন পর। এরপরই তাঁকে গ্রেফতার করে বেলঘরিয়া থানার পুলিশ। তিনি আদতে কার ছত্রছায়ায় জয়ন্ত সিং থেকে ‘জায়ান্ট সিং’ হয়ে উঠেছেন, তা নিয়ে বঙ্গ রাজনীতিতে বিধায়ক-সাংসদের মধ্যে শুরু হয়েছে টানাপোড়েন। একইসঙ্গে এ প্রশ্নও উঠেছে, ঘটনার পর কেন জয়ন্ত সিংকে গ্রেফতার করতে পারছিল না পুলিশ। তবে বিরোধীদের অভিযোগ, তিনি ছিলেন শাসকদলের নেতামন্ত্রীদের ছত্রছায়াতেই। আপাতত যেটুকু তথ্য মিলছে তাতে জানা যাচ্ছে, রবিবার রাতে ঘটনার পর এলাকার কাছে এক বন্ধুর বাড়িতে থেকে পুলিশের গতিবিধির উপর নজর রাখছিলেন জয়ন্ত। পুলিশ ধরপাকড় শুরু করতেই নিজের গাড়ি চালিয়ে উত্তরবঙ্গ পালান। সঙ্গে তদন্তকারীরা এও জানতে পারেন, কয়েকদিনে ডাবগ্রামে একটি রিসোর্টে লুকিয়ে থাকেন জয়ন্ত। দু’দিন উত্তরবঙ্গে দুটি রিসর্ট বদলায়। জয়ন্তের গতিবিধির উপর নজর রেখে উত্তরবঙ্গে টিম পাঠায় পুলিশ। টাকা ফুরিয়ে আসতেই কলকাতায় ফেরেন জয়ন্ত।
এদিকে বৃহস্পতিবারের গ্রেফতারের পর পুলিশকে জয়ন্ত জানান, টাকা নিয়ে ওড়িশা পালানোর ছক ছিল জয়ন্তর। জয়ন্তর বিরুদ্ধে বারাকপুর কমিশনারেটে ১০ টি মামলা রয়েছে। ৭ টি দক্ষিণেশ্বরে ও ৩ টি বেলঘরিয়া থানায় মামলা রয়েছে। মারধর, অস্ত্র আইনে, খুনের চেষ্টা-সহ একাধিক ধারায় মামলা রয়েছে। তবে পুলিশকে জেরায় জয়ন্ত দাবি করেন, ‘ভিডিয়োতে দেখুন আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। আমি গোলমালের খবর পেয়ে সেখানে যাই। পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করি।’
প্রসঙ্গত, গত সোমবার বেলঘরিয়ার আড়িয়াদহের বাসিন্দা এক প্রৌঢ়া ও তাঁর ছেলেকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ ওঠে। জানা যায়, কলেজ পড়ুয়া সায়নদীপ পাঁজার সঙ্গে কিছু একটা বিষয় নিয়ে পাড়ারই ছেলেদের বচসা হয়। সাময়িকভাবে বিষয়টা মিটেও যায়। সোমবার সন্ধ্যায় বাড়ির সামনেই বসেছিলেন সায়নদীপ। অভিযোগ, তখন ৮-১০ জন যুবক তাঁর ওপর হামলা চালায়। ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন তাঁর মাও। মারের চোটে সায়নদীপের দাঁত ভেঙে যায়। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ হাতে পায় পুলিশ। কিন্তু চার দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরও জয়ন্তকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে বেলঘরিয়া থানায় আত্মসমর্পণ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − twelve =