কাতার বিশ্বকাপে এশীয় দলগুলির দাপট অব্যাহত। একদিন আগেই আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে দিয়ে গোটা ফুটবল বিশ্বকে চমকে দিয়েছে সৌদি আরব। ২৪ ঘণ্টা পর জাপানি সূর্যোদয়ের সাক্ষী থাকল কাতার। গতিময় জার্মানদের গতির লড়াইয়েই হার মানিয়ে জয়ডঙ্কা বাজিয়ে দিল এশীয় ফুটবলের দৈত্য জাপান। পিছিয়ে পড়েও যেভাবে জাপানিরা কামব্যাক করল সেটা নিঃসন্দেহে কুর্নিশ করার যোগ্য।
জাপান এবং জার্মানি দু’টি দলই অত্যন্ত গতিশীল।স্বাভাবিকভাবেই খেলা শুরুর বাঁশি বাজার পরের মুহূর্ত থেকেই দুর্দান্ত গতিশীল ফুটবল উপহার দিল দুটি দল। ম্যাচের শুরুতে অবশ্য দাপট বেশি ছিল জার্মানিরই। গন্যাব্রি, মুসিয়ালা, হাভার্টজরা শুরু থেকেই একের পর এক আক্রমণে জাপানি রক্ষণকে ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছিলেন জার্মানরা। যার ফলও মেলে। ৩৩ মিনিটে পেনাল্টি থেকে জার্মানদের হয়ে গোল করে দেন ইকাই গুন্ডয়ান। গোল হজম করার পর অবশ্য দমে যায়নি জাপান। চারবারের চ্যাম্পিয়নদের পালটা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয় তারা। জার্মান আক্রমণ প্রতিহত করে পালটা প্রতি আক্রমণের পথে হাঁটে জাপানি সামুরাইরা। প্রথমার্ধে অবশ্য গোল পায়নি তাঁরা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে লড়াই হয় সমানে সমানে। কিন্তু যত সময় গড়ায় জার্মানদের আক্রমণভাগকে অনেকটাই ফিকে মনে হতে থাকে। উলটে জাপানের গতিশীল প্রতি আক্রমণে বারবার বিপদে পড়ে যাচ্ছিল জার্মানিই। রুডিগার-নয়্যাররা বারবার ব্যাকফুটে পড়ে যাচ্ছিলেন। তবে নয়্যারের দৌলতে ৭৫ মিনিট পর্যন্ত গোল হজম করতে হয়নি তাঁদের। কিন্তু জার্মান প্রতিরোধ ভেঙে যায় ৭৫ মিনিটের মাথাতেই। বা প্রান্ত থেকে জাপানি উইঙ্গারের জোরাল শট প্রথমে প্রতিহত করলেও রিবাউন্ড থেকে গোল করে সমতা ফিরিয়ে দেন রিতসু দোয়ান। ম্যাচে সমতা ফেরার পর আক্রমণের ঝাঁজ বাড়ায় জার্মানি। মুহুর্মুহু জাপানের রক্ষণকে পরীক্ষার সামনে ফেলেন জার্মানির ফরওয়ার্ডরা। কিন্তু এবারেও আক্রমণ ভাগে ফুটবলার বাড়িয়ে ফেলার খেসারত দিতে হল জার্মানদের। প্রতি আক্রমণে বিশ্বমানের গোল তুলে নিয়ে জয় নিশ্চিত করে দিলেন জাপানের ১০ নম্বর জার্সিধারী তাকুমা আসানো।
জাপানের এই জয় বিশ্ব ফুটবলে এশিয়ার মান আরও খানিকটা বাড়িয়ে দিল। সৌদি আরবের আর্জেন্টিনাকে হারানোটা যে কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, সেটা এদিন জাপানের জয়েই প্রমাণ হয়ে গেল। গ্রুপের প্রথম ম্যাচ জেতায় গ্রুপ অফ ডেথে জাপান কিছুটা হলেও সুবিধাজনক জায়গায় চলে গেল। অন্যদিকে জার্মানি চরম চাপের মুখে পড়ে গেল।