শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি নিয়ে ইতিমধ্যেই তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই, ইডি। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনে আগামী ৯ জানুয়ারির মধ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে আদালতে রিপোর্ট পেশ করতে হবে। এমন আবহে রাজ্যের আরও এক নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল।
বুধবার একটি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব থেকে সদ্য অপসারিত বুদ্ধদেব সাউ। তাঁর অভিযোগ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি-র ভর্তি প্রক্রিয়ায় বিস্তর দুর্নীতি হয়েছে। বুদ্ধদেব সাউ বলেন, ‘এসব নিয়ে আমি পদক্ষেপ নিচ্ছিলাম। তারই মাঝে আমাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। কেন সরানো হল, বুঝতে পারছি না। তবে আচার্য (রাজ্যপাল) চাইলে সিবিআই বা ইউজিসিকে দিয়ে তদন্ত করিয়ে দেখতে পারে। তাহলেই সবটা স্পষ্ট হয়ে যাবে।’
দীর্ঘ ২১ বছর ধরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিতের অধ্যাপক বুদ্ধদেববাবু। তাঁকে যাদবপুরের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন রাজ্যপাতথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য সি ভি আনন্দ বোস। সম্প্রতি যাদবপুরের সমাবর্তন ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। রাজ্যপালের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে সমাবর্তনের আয়োজন করা হয়। এরপরই সমাবর্তনের ২৪ ঘণ্টা আগে যাদবপুরের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের পদ থেকে বুদ্ধদেব সাউকে অপসারিত করেন রাজ্যপাল।
একটি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে বুদ্ধদেববাবুর অভিযোগ, ‘ইউজিসির গাইড লাইন না মেনে পিএইচডিতে সুপার নিউমেরারি পোস্ট তৈরি করে ভর্তিতে দুর্নীতি চলছে। ২০১৭ সাল থেকে এই জিনিস চলে আসছে। বিষয়টি জানতে পেরে ইউজিসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথাও বলেছিলাম। তারই মাঝে আমাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল।’
এ ব্যাপারে রাজ্যপাল তথা আচার্য এখনও প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। তবে যাদবপুরের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খোদ সদ্য অপসারিত উপাচার্য এমন অভিযোগ তোলায় বিষয়টি অন্য মাত্রা পেয়েছে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমবার্তন নিয়ে প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সমাবর্তন মিটলেও, তা বেআইনি বলে দাবি করেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আন¨ বোস। তবে পড়ুয়াদের এতে যাতে অসুবিধে না হয় সে জন্য আইনজ্ঞের পরামর্শ নেবেন বলেই জানিয়েছেন রাজ্যপাল।