সন্দেশখালির মহিলাদের একটা অভিযোগও সত্যি হলে তা লজ্জার! পর্যবেক্ষণ প্রধান বিচারপতির

শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কতগুলি এফআইআর হয়েছে ও চার্জশিট পেশ হয়েছে, তা এবার জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্যকে মুখবন্ধ খামে ওই সব নথি জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। এই প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম বলেন, ‘আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের কাছে মহিলারা যে অভিযোগ এনেছেন, তার একটাও যদি সত্যি হয়, তাহলেও তা লজ্জার।’ এদিকে ‘ন্যাশনাল ক্রাইম ব্যুরো’ রিপোর্টে এ রাজ্যকে মহিলাদের জন্য সুরক্ষিত বলে দাবি করা হয়েছে। তবে সন্দেশখালির ঘটনায় যে এ নিয়ে প্রশ্ন থেকে গেল বৃহস্পতিবার মনে করিয়ে দেয় হাইকোর্ট।
উল্লেখ্য, আদালতের অনুমতি নিয়ে আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল সন্দেশখালিতে যান। সেখানে তিনি স্থানীয় মহিলাদের সঙ্গে কথাও বলেন। এরপর এই কথোপকথনের ওপর ভিত্তি করেল হলফনামাও জমা দেন আদালতে। বৃহস্পতিবার এই হলফনামা আদালত কক্ষে পড়ে শোনানোর পরই প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমকে এমনই মন্তব্য করতে শোনা যায়।
এদিন আদালতে আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল জানান, ‘জমিকে কেন্দ্র করে সবকিছু হয়েছে। পুলিশও যুক্ত। একটাও হলফনামা মিথ্যে হলে, সব ছেড়ে দেব। আমার কাছে যারা এসেছিল, তাদের প্রত্যেকের চোখে জল ছিল।’ এরপরই আইনীজীবী টিব্রেওয়াল প্রশ্ন করেন, ‘কত বছর লাগবে এদের বিচার দিতে?’ পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, শুধু সন্দেশখালি নয়, মিনাখাঁতেও এমন ঘটনা ঘটেছে। জমি নিয়ে নেওয়ার প্রতিবাদ করায় ধর্ষণ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন প্রিয়াঙ্কা। তিনি চান, জমি দুর্নীতি রুখতে কমিশন বসানো হোক।
প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল সওয়াল করার সময় শাহজাহান শেখের আইনজীবী বিশ্বরূপ মুখোপাধ্যায় প্রতিবাদ করলে তাঁকে কার্যত ধমক দিয়ে থামিয়ে দেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘আপনি নিজের অন্ধকার দূর করুন, তারপর কথা বলবেন। এখন কোনও কথা বলবেন না। একটা হলফনামাও সত্যি হলে, তা লজ্জার। ন্যাশনাল ক্রাইম ব্যুরোর রিপোর্টে সুরক্ষার ক্ষেত্রে প্রথমে পশ্চিমবঙ্গ। আর এখানে দেওয়া একটি অভিযোগও সত্যি হলে সেই রিপোর্ট মিথ্যে।’ এদিকে, অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল অশোক চক্রবর্তী প্রশ্ন তোলেন, জনস্বার্থ মামলায় অভিযুক্ত কীভাবে শুনানিতে অংশ নেন।
তবে এজি কিশোর দত্ত দাবি করেন, সন্দেশখালিতে মহিলারা থাকতে পারেন না, এই দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। তাঁর দাবি, দুটো অভিযোগ নেওয়া হলে ২ হাজার অভিযোগ নেওয়ার ক্ষেত্রেও সমস্যা হবে না। সঙ্গে এও বলেন, সন্দেশখালিতে যাওয়ার সময় ইডি পুলিশকে কিছু না জানালেও, পুলিশই নিরাপত্তা দিয়েছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eleven − one =