স্পেনের পাসের বন্যায় নিজেদের ভুলেই ডুবল ইতালি, শেষ ষোলোয় মোরাতারা

স্পেন ও ইতালি দু-দলই জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করেছিল। সুতরাং, স্পেন বনাম ইতালি ম্যাচটি ছিল মূলত, কে আগে শেষ ষোলোয় জায়গা করে নেবে। শুরু থেকে কঠিন পরীক্ষার সামনে পড়ল ইতালি। প্রথমার্ধে ৪টি শট স্পেনের। এর মধ্যে দুটি দুর্দান্ত সুযোগ। ক্লাব সতীর্থ ফ্যাবিয়ান রুইজ চাপে ফেলেন ইতালি গোলরক্ষক ডোনারুমাকে। প্রথম দশ মিনিটের মধ্যেই অ্যাডভান্টেজে থাকতে পারত স্পেন। মোরাতার ক্রসে হেডার লক্ষ্যে রাখতে ব্যর্থ নিকো উইলিয়ামস। এ বছর ৪ ম্যাচে অপরাজিত স্পেন। তিনটি জয় এবং একটি ড্র। ইতালির বিরুদ্ধে লড়াই সহজ ছিল না। ম্যাচের ২৫ মিনিটে ফ্যাবিয়ান রুইজের চকিত শট চাপে ফেলেছিল ইতালিকে। তবে তাঁদের ক্যাপ্টেন বিশ্বের অন্যতম সেরা গোলকিপার। ডোনারুমা সে যাত্রায়ও ভুল করেনি। আক্রমণ তৈরি করলেও ইতালি ডিফেন্সে বারবার আটকে যাচ্ছিল স্পেন। দূর পাল্লার শটও ট্রাই করেন স্প্যানিশ ফুটবলাররা।

স্পেনের পাসের ঝড়ে ব্যস্ত থাকতে হল ইতালি ডিফেন্সকে। এমন ম্যাচেরই প্রত্যাশা ছিল। অন্যতম দুই সেরা দলের লড়াই। এই গ্রুপের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ম্যাচ। প্রথমার্ধ গোলশূন্যই থাকে। প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে হলুদ কার্ড দেখেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার রড্রি। গ্রুপের প্রথম ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধেও হলুদ কার্ড দেখেছিলেন। গ্রুপের শেষ ম্যাচে আলবেনিয়ার বিরুদ্ধে কার্ড সমস্যায় রড্রিকে পাবে না স্পেন।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই জোড়া পরিবর্তন করেন ইতালি কোচ স্পালেত্তি। জর্জিনহো এবং ফ্রাত্তেসির পরিবর্তে ব্রায়ান ক্রিস্তান্তে ও আন্দ্রে ক্যামাবিয়াসো। মাঠে নামার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই রড্রিকে ফাউল করায় হলুদ কার্ড দেখেন ব্রায়ান ক্রিস্তান্তে। স্পেনের পাসের ঝড়ে এত চাপ সহ্য করতে করতে ক্লান্ত ইতালি। আর তাতেই হল বড় ভুল। ম্যাচের ৫৫ মিনিটে বাঁ দিক থেকে বক্সে বল পাঠান নিকো উইলিয়ামস। হেড করলেও কোনও রকমে ছোঁয়া লাগে মোরাতার। ডোনারুমার গ্লাভসে লেকে দিক বদলায় বল। কিন্তু ইতালি ডিফেন্ডার ক্যালাফিয়োরি পায়ে ধাক্কা খেয়ে জালে। ক্যালোফিয়োরির আত্মঘাতী গোলে লিড নেয় স্পেন।

কিছুক্ষণের মধ্যেই আলভারো মোরাতার দূরপাল্লার শট। টার্গেটেই ছিল। ফিস্ট করে বাঁচিয়ে দেন ডোনারুমা। কর্নার থেকে গোলের পরিস্থিতি। ক্যামবিয়াসো গোল লাইন সেভ করেন। ডান দিক থেকে স্প্যানিশ তরুণ ইয়ামালের কার্লিং শট অল্পের জন্য বাইরে যায়। ৬৪ মিনিটে আবারও জোড়া পরিবর্তন করে ইতালি। তাতেও স্প্যানিশ পাসের বন্যা থামানো যায়নি। ম্যাচে সব মিলিয়ে প্রায় ৬০০ পাস! ৯০ শতাংস নিখুঁত পাস! ৭০ মিনিটে নিকো উইলিয়ামসের শট ক্রসবারে লাগে। ভাগ্য সঙ্গ দেয়নি দুর্দান্ত খেলা নিকোকে।

ইয়ামাল ও নিকোকে তুলে নেওয়ার পরই শেষ দিকে পাল্টা চাপে পড়ে স্পেন। এই দুই তরুণ ইতালি ডিফেন্সকে এতটাই ব্যস্ত রেখেছিলেন, আক্রমণে ওঠার সুযোগই পাচ্ছিল না ইতালি। ৪ মিনিট অ্যাডেড টাইম দেওয়া হয়। স্পেনের ফের অ্যাটাক। যদিও ডোনারুমার জোড়া সেভ ব্যবধান বাড়াতে দেয়নি স্পেনকে। ম্যাচের শেষ মুহূর্ত। কর্নার পায় ইতালি। উঠে আসেন গোলকিপার ডোনারুমাও। তাতেও কোনও লাভ হয়নি। আত্মঘাতী গোলে ১-০’র জয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই শেষ ষোলোয় স্পেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 − 3 =