রামকৃষ্ণদেবের উক্তি নিয়ে কটাক্ষ করায় শাস্তির মুখে ইসকনের সন্ন্যাসী

কলকাতা: রামকৃষ্ণদেবের ‘যত মত, তত পথ’ উক্তি নিয়ে কটূক্তি করায় চূড়ান্ত সমালোচনার মুখে ইসকনের সন্ন্যাসী অমোঘলীলা প্রভু। তাঁর এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করা হয় সমাজের বিভিন্ন মহল থেকে। এমনকী ইসকন কলকাতার ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমণ দাস প্রভুও এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন। আর এই মন্তব্যের জেরে অমোঘ লীলা প্রভুকে ইসকন কর্তৃপক্ষের শাস্তির মুখেও পড়তে হয়। ইসকনের তরফ থেকে আপাতত তাঁকে কোনও ধর্মীয় ভাষণ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
সূত্রে খবর, ইসকন দ্বারকা মন্দির, ভাইস প্রেসিডেন্ট অমোঘ লীলা প্রভুর ধর্ম চর্চার সম্বন্ধে একটি বক্তব্যের ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল সাইটে। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায় শ্রী রামকৃষ্ণ দেব এবং স্বামী বিবেকানন্দকে নিয়ে। সেখানেই অমোঘ লীলা প্রভুকে ‘ যত মত তত পথ’ উক্তিটি নিয়ে ব্যঙ্গও করতে দেখা যায়। পাশাপাশি উক্তিটির যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। ভিডিওতে দেখা গেছে, অমোঘ লীলা প্রভু প্রশ্ন তুলেছেন, যত মত, তত পথ কথার মানে কী তা নিয়েই। এই প্রসঙ্গে আমোঘ লীলা প্রভু বলেন, ‘যে যার পছন্দের মতো রাস্তা ধরে বেরিয়ে পড়ো, গন্তব্য একই হবে। কিন্তু সেটা তো কখনই হয় না।’ তাঁর যুক্তি, ‘আমি যদি মায়াপুর যেতে চাই, তবে ডান-বাম-আগে-পিছে যে কোনও রাস্তা ধরে যাওয়া সম্ভব নয়। একটি নির্দিষ্ট রাস্তা ধরতে হবে।’ এখানেই সমালোচনার মুখে পড়েছেন আমোঘ লীলা প্রভু। আদতে তিনি, পরমহংস রামকৃষ্ণ দেবের মতের অপব্যাখ্যা করেছেন বলে মনে করছেন অনেকেই।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ইতিমধ্যেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এই বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করলেন তৃণমূলের মুখপাত্র তথা রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। কুণাল এদিন তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্ট এ লেখেন, ‘এই অপব্যাখ্যা, অসভ্যতার মানে কী? যিনি করছেন, যে সংগঠনের মঞ্চে হচ্ছে, তীব্র ধিক্কার জানাই। এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’ বিষয়টির কড়া সমালোচনা করেন তিনি।
এদিকে ইতিমধ্যেই অমোঘ লীলা প্রভুর এই বক্তব্যের জন্য নিন্দা প্রকাশ করা হয় ইসকন কর্তৃপক্ষের তরফ থেকেও। এরপরই শাস্তির খাঁড়া নেমে আসে তাঁর ঘাড়ে।
এদিকে এই বিষয়ে সমালোচনার ঝড় সামাজিক মাধ্যমে। একাধিক ধর্মীয় মহলেও বিষয়টির নিন্দা করা হয়। শ্রী রামকৃষ্ণের এই কালজয়ী উক্তি সম্পর্কে সবাই জানেন যে তিনি এই বার্তাই দিতে চেয়েছিলেন যে, ঈশ্বরের প্রার্থনা করা, তাঁকে পাওয়ার অনেক মত এবং অনেক পথ থাকতে পারে। শেষে গিয়ে সবাই ঈশ্বরের কাছেই মিলিত হবেন। এরকম দার্শনিক ব্যাখ্যার মানেটাই বোঝেননি অমোঘ লীলা প্রভু। সেই কারণেই বিষয়টি নিয়ে অবুঝ মন্তব্য করেছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − 7 =