মহেন্দ্র সিং ধোনি অবসর নেবেন কিনা, হার্দিক পান্ডিয়া ‘ক্যাপ্টেন কুল’ হবেন কিনা, চেন্নাই ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হবে কিনা, পরপর দু’বার গুজরাট আইপিএল দখলে নেবে কিনা— এই একগুচ্ছ প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য রবিবার বিকেল থেকে আমেদাবাদে চোখ রেখেছিল পুরো দেশ। সে সব মুলতুবি রেখে রবিবার চ্যাম্পিয়ন বৃষ্টি। তাই সোমবার আবার আইপিএল ফাইনাল। প্রায় সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ আমেদাবাদে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামে। ধোনি-হার্দিক দ্বৈরথ দেখতে আসা দর্শকরা হতাশ হয়ে যান। সকলের মনে ঘুরঘুর করতে থাকে একটাই প্রশ্ন, কখন থামবে বৃষ্টি? কোথায় কী? বৃষ্টির মন-মর্জিতে আইপিএল ফাইনাল ধুয়ে গেল। অবশ্য এতে আকর্ষণ কমছে না। কথায় বলে অপেক্ষা আগ্রহ বাড়ায়। ষোড়শী আইপিএলের ফাইনাল সোমবারও যে তুমুল সুগন্ধী ছড়াবে, সন্দেহ কি! সন্ধের মুখে বৃষ্টির দাপটে মোতেরার গ্যালারি অধৈর্য হয়ে পড়ছিল। রাত ৮.৫৫ নাগাদ বৃষ্টি থামে। সকলেই ভাবছিলেন, এ বার নিশ্চিত ভাবে টস হবে, শুরু হবে খেলা। তখনই বৃষ্টির নতুন স্পেল তছনছ করে দিয়েছিল স্বপ্ন। সমাপ্তি অনুষ্ঠান যেমন ধুয়ে গিয়েছে, তেমনই ম্যাচ হওয়ার সম্ভাবনাও ক্রমশ কমছিল। ৯.২০ নাগাদ ফের বৃষ্টি শুরু হতেই বোঝা যায়, রবিবার ফাইনাল হওয়ার সম্ভাবনা ক্রমশ কমছে। তখনই নানান অঙ্ক নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। ম্যাচ যদি না হয়, কে চ্যাম্পিয়ন হবে? এমন সময় আইপিএল টুইট করে জানিয়ে দেয়, সোমবার রিজার্ভ ডে রাখা আছে ফাইনালের। শেষ পর্যন্ত সোমবারই হচ্ছে চেন্নাই বনাম গুজরাটের ফাইনাল। যে কয়েকবার বৃষ্টি থেমেছে, আলোচনায় বসেছেন দুই আম্পায়ার, ম্যাচ রেফারি জাভাগল শ্রীনাথ এবং দু-দলের ক্যাপ্টেন, মেন্টররা। মাঠকর্মীদের সঙ্গেও দীর্ঘ সময় কথাও হয়। সেখানে মূলত কয়েকটি বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে।
১. দীর্ঘ দু’মাসের ধুন্ধুমার লড়াই শেষে সংক্ষিপ্ত ফাইনাল হোক কেউই চান না। দু’দলই চায় পুরো ম্যাচ হোক, যোগ্য দল জিতুক।২. আজ কোনও রকমে ম্যাচ করা গেলেও সেটা ৫ ওভারের করতে হত। দু’দলই এই বিষয়ে সায় দেয়নি।
৩. বৃষ্টির পর মাঠের যা পরিস্থিতি, তাতে ম্যাচ হলে প্লেয়ারদের চোট পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
৪. আগামী ৭-১১ জুন বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল। শুভমন গিল, মহম্মদ সামি, অজিঙ্ক রাহানে, রবীন্দ্র জাডেজাদের মতো গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা তাতে খেলবেন। তাঁদের কেউ চোট পেলে বড় রকমের সমস্যায় পড়বে ভারতীয় দল।
যুক্তি, আশঙ্কা, দুর্যোগ এই তিনের যোগফলেই আইপিএলের ফাইনাল হবে সোমবার সন্ধেয়। মজার কথা হল, আইপিএলের সূচি যখন ঘোষণা করা হয়েছিল তখন কিন্তু রিজার্ভ ডে নামক কোনও আশ্চর্য বস্তু আছে এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে, তা-ই জানা ছিল না। ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তারা, একগুচ্ছ স্পনসর, সম্প্রচারকারী চ্যানেল, ডিজিটাল সত্ত্বাধিকারী সংস্থা — কার চাপে বোর্ডকে হঠাৎ ঝুলি থেকে রিজার্ভ ডে বার করতে হল সেই গবেষণাই এখন চলছে ভারতীয় ক্রিকেট মহলে। আশ্চর্যের এখানেই শেষ নয়। গত ১৫ মরসুমে প্লেয়িং কন্ডিশন নামে আইপিএলের ম্যাচ পরিচালনার শর্তাবলী সরকারি ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই ১৬তম মরসুমে অজানা কারণে প্লেয়িং কন্ডিশনের নতুন নিয়মাবলী দেওয়া হয়নি। গত মরসুমে যে নিয়ম ছিল, তা-ই রাখা হয়েছে। গত মরসুমে অবশ্য আইপিএল ফাইনালের রিজার্ভ ডে থাকবে, তা আগে থেকেই ঘোষণা করা হয়েছিল। তা হলে কি বোর্ড ধরেই নিয়েছিল, নতুন নিয়ম না বলার জন্য গত বারের নিয়মই বলবৎ থাকবে?