অভিষেককে জেরা করেই ক্ষান্ত নয় সিবিআই, রেকর্ড করা বয়ান খতিয়ে দেখতে চান তদন্তকারীরা, জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কুন্তলকেও

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকেরা যে কুন্তলের মুখ দিয়ে অভিষেকের নাম বলাতে চাইছেন, এমনটাই দাবি করে এক চিঠি দেন কুন্তল। এই নিয়ে তিনি বিচারক ও পুলিশের উদ্দেশে চিঠিও লেখেন। এই চিঠির বিষয়ে ইডি-সিবিআই প্রয়োজনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে বলে এজলাসে উল্লেখ করেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এরপর নানা ঘটনার পর এই চিঠি ইস্যুতেই শনিবার তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআই আধিকারিকেরা। তবে এখানেই ক্ষান্ত হতে চাইছে না সিবিআই। সিবিআই সূত্রে খবর, শনিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদের সময় কুন্তল ঘোষের চিঠি প্রসঙ্গে একাধিক প্রশ্ন করা হলে এসএসসি দুর্নীতিতে উঠে আসা আরও বেশ কয়েকজনের নাম সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হয় অভিষেকের কাছে। একইসঙ্গে অভিষেকের পুরো বয়ানই রেকর্ড করেছেন তদন্তকারীরা। এই বয়ান রেকর্ডের ওপর ভিত্তি করে আগামীতে তাঁর সমস্ত কথাই পুনরায় খতিয়ে দেখা হবে।
এদিকে সিবিআই সূত্রে এ খবরও মিলছে, কুন্তলের চিঠি প্রসঙ্গে জেলে গিয়ে তাঁকে জেরা করবেন সিবিআই-এর তদন্তকারী আধিকারিকেরা। মিলিয়ে দেখা হবে দুজনের বয়ান।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ মার্চ কলকাতার শহিদ মিনারে তৃণমূলের যুব সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘যবে থেকে সারদা হয়েছিল আক্রমণ ছিল আমার দিকে। মদন মিত্র, কুণাল ঘোষ দীর্ঘদিন কাস্টডিতে ছিলেন। কী বলেছে জানেন এদের? অভিষেকের নাম নাও ছেড়ে দেব। সারদা থেকে শুরু করে নারদা। তারপর হল গরু, কয়লা, এসএসসি। আমার যদি কোথাও যোগসাজশ থাকে, প্রমাণ করতে পারেন আমি যুক্ত, আমার পিছনে ইডি-সিবিআই লাগাতে হবে না। সারদা, নারদা, টেট, এসএসসি, কয়লা, গরু হোক এই শহিদ মিনারের মঞ্চে আমি মৃত্যুবরণ করব। কথা দিয়ে গেলাম।’
এর ঠিক পরপরই আদালতে তোলার সময় তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত কুন্তল ঘোষ বলেছিলেন, ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলানোর জন্য চেষ্টা করছে। কে চেষ্টা করছে বলব না। চিঠি আকারে মহামান্য আদালতকে সবটা জানিয়েছি।’ দু-য়ে দু-য়ে চার করে বুঝতে কারও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়, কুন্তল যে অভিযোগ করেছিলেন তার আঙুল ছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের দিকেই। এরপর এই চিঠি নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়। এই চিঠি সংক্রান্ত বিষয়ে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে ইডি-সিবিআই। নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এরপর শীর্ষ আদালতে যান অভিষেক। এরপর নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এক বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে সাক্ষাৎকারে বেশ কিছু কথা বলেছিলেন এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে মামলা সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন অন্য কোনও বিচারপতির কাছে। এরপর মামলা যায় বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। তবে হাকিম বদলালেও বদলায়নি হুকুম। বিচারপতি সিনহাও অভিষেকের আইনজীবীকে তদন্তে সহযোগিতা করার কথা বলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 5 =