শীর্ষ আদালত থেকে অন্তর্বর্তী জামিন পেলেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা পবন খেরা। প্রধানমন্ত্রীর নাম বিকৃত করার জেরে গ্রেপ্তার করা হয় কংগ্রেস নেতা পবন খেরাকে। সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার দলীয় সম্মেলন উপলক্ষ্যে রায়পুর যাওয়ার পথে দিল্লি বিমানবন্দরে প্রবীণ কংগ্রেস নেতাকে গ্রেপ্তার করে অসম পুলিশ। তবে কংগ্রেসের এই প্রবীণ নেতার গ্রেপ্তারির এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা করা হয় কংগ্রেসের তরফ থেকে। একইসঙ্গে আনা হয় বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগ। তবে এরই পাশাপাশি কংগ্রেসের তরফ থেকে অত্যন্ত দ্রুত সুপ্রিম কোর্টে জামিনের আরজি জানানো হয়। শুনানির পর খেরার অন্তর্বতী জামিন মঞ্জুর করে শীর্ষ আদালত। দেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা মামলাগুলি একসঙ্গে বিচার করা হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তবে জামিন মঞ্জুর করে প্রধান বিচারপতি বলেন, সমস্ত কটাক্ষেরই একটা সীমা থাকা উচিত।
উল্লেখ্য, ছত্তিশগড়ের রাইপুরে বসতে চলেছে কংগ্রেসের অধিবেশন। সেই অধিবেশনে যোগ দিতেই যাচ্ছিলেন তিনি। রাইপুরগামী উড়ানেও বসে পড়েছিলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা। বিমান থেকে নামিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানা গেছে। এই গ্রেপ্তারি নিয়ে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা জানান, তাঁর ব্যাগেজে কিছু সমস্যা রয়েছে বলে প্রথমে জানানো হয়েছিল। কিন্তু তারপরেই বিমান সফর করতে পারবে না বলে জানানো হয়। তাঁর সঙ্গে ডিসিপি পদমার্যাদায় এক পুলিশ আধিকারিক দেখা করবেন, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানান। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর অসম পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে বলে জানান পবন খেরা।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে আদানি ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করেন কংগ্রেসের এই বর্ষীয়ান নেতা পবন খেরা। মোদির নাম নিয়ে কটাক্ষ করেন তিনি। নরেন্দ্র মোদীকে ‘নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদি’র পরিবর্তে ‘নরেন্দ্র গৌতমদাস মোদি’ বলে আখ্যা দেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা। শিল্পপতি গৌতম আদানির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠতাকে কটাক্ষ করেই যে এই মন্তব্য, তা বুঝতে কারও আসুবিধা হওয়ার কথা ছিল না, হয়ওনি। এই মন্তব্যের নিন্দা করে খেরার বিরুদ্ধে অসমে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়। সেই এফআইআর অনুযায়ী, দিল্লি পুলিশের কাছে পবন খেরাকে গ্রেপ্তারির অনুরোধ জানানো হয় অসম পুলিশের তরফ থেকে। তারপরই অসম পুলিশ প্রবীণ কংগ্রেস নেতাকে গ্রেপ্তার করে।
এদিকে, পবণ খেরার এই গ্রেপ্তারির প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে দিল্লি বিমানবন্দর চত্ত্বর। সরব হন তাঁর সঙ্গে আসা কংগ্রেস নেতৃত্ব। মোদি বিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। এই গ্রেপ্তারির পিছনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। খেরার এই গ্রেপ্তারি নিয়ে সরব হতে দেখা যায় ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র বাঘেলকেও। এই প্রসঙ্গে তিনি এও বলেন, বিজেপি যে কংগ্রেসকে ভয় পাচ্ছে, তার প্রমাণ খেরার এই গ্রেপ্তারি। খেরাকে গ্রেপ্তার করে কংগ্রেসের অধিবেশন পণ্ড করা যাবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী। প্রবীণ কংগ্রেস নেতার গ্রেফতারি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে নিশানা করতে ছাড়েননি আরেক কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ-ও। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে স্বৈরাচারী মনোভাবের অভিযোগ করেন তিনি।