জীবনের মোবাইল দীর্ঘক্ষণ পুকুরের জলে পড়ে থাকলেও তার থেকে তথ্য মিলছে বলে খবর সিবিআই সূত্রে। আলিপুর বিশেষ সিবিআই আদালতে সিবিআই-এর আইনজীবী দাবি করেন, জীবনকৃষ্ণের স্রেফ একটি মোবাইল থেকে কয়েকশো অডিয়ো ফাইল পাওয়া গিয়েছে। সেই অডিয়ো ফাইল এক্সট্র্যাক্ট করা হয়েছে। সেখানে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত প্রচুর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকতে পারে বলে আশা করছেন তদন্তকারীরা। আর তা খতিয়ে দেখতে জীবনকে নিজেদের হেপাজতে নিয়ে জেরা করার প্রয়োজন রয়েছে বলে আদালতে সওয়াল করেন সিবিআই-এর আইনজীবী। পাশাপাশি সিবিআই সূত্রে এও জানানো হয়, জীবনের আরও একটি মোবাইল সচল করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণকে আলিপুর সিবিআই আদালতে পেশ করা হয়। এদিন সওয়ালের সময় জীবনের আইনজীবী জামিনের আবেদন করার পাশাপাশি এও জানান, যত দিন যাচ্ছে, জন প্রতিনিধি হিসেবে জীবনের সম্মানহানি হচ্ছে। জামিন না হলেও যাতে জেল হেপাজতে পাঠানো হয়, তারও আবেদন করেন জীবনের আইনজীবী। অর্থাৎ তিনি কেবল সিবিআই হেপাজতে যেতে চান না বলে জীবনের আইনজীবী জানান। তবে এই আর্জি শোনেননি বিচারক। এদিন জীবনকৃষ্ণের জামিনের আর্জি খারিজ করে এবং জেল হেপাজতের আর্জিকেও মান্যতা না দিয়ে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত জীবনের সিবিআই হেপাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।
এদিকে আদালত সূত্রে খবর, জীবনের বর্তমান অবস্থায় ভয়েস স্যাম্পল কালেক্ট করে টেস্ট করতে চান গোয়েন্দারা। অর্থাৎ জীবনকৃষ্ণের ভয়েস স্যাম্পল করাতে চায় সিবিআই। কারণ, আগেই সিবিআই-এর তরফের আইনজীবী আদালতে জানিয়েছিলেন,আগে রেকর্ড হওয়া ভয়েস ফাইল পাওয়া গিয়েছে। যদিও বিচারক প্রাথমিক ভাবে জানান, সিবিআই হেপাজতে থাকাকালীন ভয়েস স্যাম্পল কালেক্ট করে টেস্ট করতে পাঠানো যাবে না। একমাত্র ম্যাজিস্ট্রেট এর সামনে বা বিচার বিভাগীয় হেপাজতে থাকাকালীন স্যাম্পল টেস্ট করার জন্য সংগ্রহ করা যাবে। যদিও তা মানতে চাননি সিবিআই-এর আইনজীবী। তিনি ২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর একটি রায়কে উল্লেখ করে জানান, ‘তদন্তের স্বার্থে যে কোনও বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট ভয়েস স্যাম্পল টেস্টের নির্দেশ দিতে পারেন।’
এরপরই জীবনকৃষ্ণের ভয়েস স্যাম্পল কালেক্ট করার অনুমতি দেয় আদালত। অর্থাৎ সিবিআই হেপাজতেই জীবনকৃষ্ণের ভয়েস স্যাম্পল সংগ্রহ করা যাবে। শীর্ষ আদালতের আগের মামলার রায়ের ভিত্তিতে নিম্ন আদালতের এই সিদ্ধান্ত। তবে এর পাশাপাশি বিচারক এদিন এও স্পষ্ট করে দেন, স্বাধীন সাক্ষীর উপস্থিতিতে স্যাম্পল সংগ্রহ করতে হবে। কোনওভাবে অভিযুক্তের উপর কোনও চাপ তৈরি করা যাবে না বলেও স্পষ্ট করে দেন বিচারক।