আবার গোলের খরা। নব্বই মিনিটে গোলমুখ খুলতে পারলেন না সুনীলরা। বৃহস্পতিবার ভারতীয় সময় মধ্যরাতে সৌদি আরবের আভার ডিম্যাক স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র ভারতের। এই ম্যাচটার ওপর অনেকটাই নির্ভর করছিল ইগর স্টিমাচের দলের ভাগ্য। জিততে পারলে কিছুটা সুবিধাজনক জায়গায় থাকত ভারত। কিন্তু ব়্যাঙ্কিংয়ে ভারতের নীচে থাকা আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে আটকে গেলেন সুনীলরা। যার ফলে বিশ্বকাপের যোগ্যতাঅর্জন পর্বের তৃতীয় রাউন্ডে যাওয়া সামান্য কঠিন হল। তবে আফগানিস্তান, কুয়েত এবং কাতারের বিরুদ্ধে এখনও ম্যাচ বাকি ভারতের। তাই সম্ভাবনা এখনও রয়েছে। তবে ২৬ মার্চ গুয়াহাটিতে ফিরতি লেগে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে জিততেই হবে স্টিমাচের দলকে। এএফসি এশিয়ান কাপ থেকে গোলের দেখা নেই। ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলে তুলনায় কমজোরী আফগানদের বিরুদ্ধে তিন পয়েন্ট তুলে নেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ ছিল। কিন্তু সেটা হাতছাড়া করল ভারত।
চোটের জন্য এদিন ছিলেন না সাহাল আব্দুল সামাদ। এদিন ভারতের জার্সিতে অভিষেক হয় বিক্রম প্রতাপের। শুরুটা খারাপ করেনি ইগর স্টিমাচের দল। প্রথম পাঁচ মিনিটের মধ্যে দু”বার কর্নার পায় ভারত। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে যথেষ্ট আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে শুরু করে সুনীলরা। কিন্তু প্রথম কোয়ার্টারের শেষদিক থেকে মাঝমাঠের দখল নেওয়ার চেষ্টা করে আফগানিস্তান। প্রেসিং ফুটবল খেলে ভারতকে বিপাকে ফেলার চেষ্টা করেন অ্যাশলে ওয়েস্টউড। তবে বল মূলত মাঝমাঠেই ঘোরাফেরা করে। প্রথম ৩০ মিনিট রক্ষণ সামলে সেফ ফুটবল খেলে ভারতীয় দল। বরং শুরুটা ভাল না হলেও, প্রথমার্ধে দু”তিনটে গোল লক্ষ্য করে শট নেয় আফগানরা। কিন্তু গুরপ্রীতকে পরাস্ত করতে পারেনি। প্রথমার্ধের শেষ ১৫ মিনিট আবার ম্যাচে ফেরে ভারত। দুটো সিটার মিস করেন মনবীর সিং। নয়তো বিরতির আগেই এগিয়ে যেতে পারত ভারত। অভিষেক ম্যাচে ছটফট করলেও খুব বেশি নজর কাড়তে পারেননি ছন্দে থাকা বিক্রম।
দ্বিতীয়ার্ধেও দু”দলই কমবেশি সুযোগ পায়। ম্যাচের ৫৮ মিনিটে ভারতের সামনে সুযোগ ছিল। আকাশ মিশ্রর ক্রস থেকে বিক্রম প্রতাপের হেড একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তার চার মিনিট পর ম্যাচের ৬২ মিনিটের মাথায় গোলের সুযোগ পায় আফগানরা। কিন্তু বলে পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ আকবরী। দ্বিতীয়ার্ধে অনবদ্য আফগান রক্ষণ। বক্সে বেশ কয়েকটা ক্রস ভেসে এলেও বিপদমুক্ত করে আফগানিস্তানের রক্ষণ। অভিষেক ম্যাচে বার তিনেক বিপক্ষের বক্সে ঢুকে পড়লেও তেকাঠিতে বল রাখতে পারেননি মুম্বই সিটির তরুণ স্ট্রাইকার। ম্যাচের ৮০ মিনিটে সবচেয়ে সহজ সুযোগ ভারতের। কর্নার থেকে শুভাশিসের হেড বাইরে যায়। কয়েকটা বিক্ষিপ্ত সুযোগ ছাড়া ম্যাচের বাকি সময়টা ব্যাটল অফ মিডফিল্ড। তারমধ্যেও গোল লক্ষ্য করে আফগানিস্তানের শট তুলনায় বেশি ছিল। জয় ছাড়া কোনও রাস্তা ছিল না ভারতের সামনে। তাসত্ত্বেও কেন রক্ষণাত্মক স্ট্র্যাটেজি অবলম্বন করলেন স্টিমাচ, সেটা বোধগম্য হল না। হাতেগোনা মাত্র কয়েকবার বল পান সুনীল ছেত্রী। বাকি সময়টা দর্শক। রাত জেগে ভারতীয় দলের এই পারফরম্যান্স দেখে হতাশ হবে সমর্থকরা।