এশিয়া কাপকে সামনে রেখে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) অবশেষে ঘোষণা করল জাতীয় দলের নাম। মঙ্গলবার নির্বাচক প্রধান অজিত আগরকর মুম্বইয়ে সাংবাদিক বৈঠকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন ১৫ জনের দল। এত দিন ধরে সূর্যকুমার যাদবের অধিনায়কত্ব নিয়ে জল্পনা চলছিল। অবশেষে সেই জল্পনার অবসান ঘটিয়ে তাঁকেই দলের অধিনায়ক ঘোষণা করা হল। তাঁর সহ-অধিনায়ক করা হয়েছে টেস্ট দলের অধিনায়ক শুভমন গিলকে।
দল ঘোষণার সময় নিয়েও কিছুটা নাটক তৈরি হয়। দুপুর দেড়টায় ঘোষণার কথা থাকলেও তা প্রায় দেড় ঘণ্টা দেরিতে হয়। মুম্বইয়ে প্রবল বৃষ্টির কারণে প্রধান নির্বাচক আগরকর এবং বোর্ডের সচিব দেবজিৎ শইকীয়া বৈঠকের স্থানে পৌঁছতে দেরি করেন। তবে শেষ পর্যন্ত দল ঘোষণার পর ক্রিকেটমহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসে কয়েকটি নাম।
সবচেয়ে বেশি নজর ছিল শুভমন গিলকে দলে নেওয়া হবে কি না, সেই বিষয়ে। শেষমেশ দেখা গেল, তাঁকে শুধু দলে রাখা হয়নি, বরং সহ-অধিনায়কের দায়িত্বও ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মনে করিয়ে দেওয়া ভাল, সূর্য প্রথমবার ভারতের টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক হওয়ার সময় গিলই ছিলেন তাঁর ডেপুটি। তবে গত দুটি সিরিজ়ে শুভমন খেলতে না পারায় অক্ষর পটেলকে সহ-অধিনায়ক করা হয়েছিল। এ বার গিল নিজের পুরনো জায়গায় ফিরলেন।
অন্যদিকে নজর ছিল যশস্বী জয়সওয়ালকে ঘিরেও। আইপিএলে ভালো পারফরম্যান্স করলেও তাঁকে মূল দলে নেওয়া হয়নি। তবে স্ট্যান্ড বাই হিসাবে রাখা হয়েছে। শ্রেয়স আয়ারের ক্ষেত্রেও একই চিত্র। চোট কাটিয়ে মাঠে ফেরার পরও নির্বাচকদের ভরসা পাননি তিনি। বাদ পড়েছেন আসামের তরুণ তারকা রিয়ান পরাগও।
তবে রিঙ্কু সিংহকে দলে রেখেছেন নির্বাচকেরা। এ নিয়েও অনেক জল্পনা চলছিল যে, হয়তো তাঁকে নেওয়া হবে না। কিন্তু কেকেআরের নির্ভরযোগ্য ব্যাটারকে এশিয়া কাপে দেখা যাবে। দ্বিতীয় উইকেটরক্ষক হিসাবে সুযোগ পেয়েছেন জিতেশ শর্মা।
অলরাউন্ডারদের ক্ষেত্রে নির্বাচকরা তিনটি বিকল্প রেখেছেন। পেসার অলরাউন্ডার হিসাবে রয়েছেন হার্দিক পাণ্ড্য এবং শিবম দুবে। স্পিন অলরাউন্ডার হিসাবে জায়গা পেয়েছেন অক্ষর পটেল। বিশেষজ্ঞ স্পিনার হিসেবে দলে আছেন বরুণ চক্রবর্তী ও কুলদীপ যাদব। তিন বিশেষজ্ঞ পেসার হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে জসপ্রীত বুমরাহ, অর্শদীপ সিংহ এবং কেকেআরের তরুণ পেসার হর্ষিত রানাকে।
মূল দলের পাশাপাশি পাঁচজন স্ট্যান্ড বাই ক্রিকেটার ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁরা হলেন— প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ, ওয়াশিংটন সুন্দর, রিয়ান পরাগ, ধ্রুব জুরেল এবং যশস্বী জয়সওয়াল। মূল দলের কোনও সদস্য চোট পেলে বা ছিটকে গেলে তাঁদের মধ্য থেকেই নেওয়া হবে বিকল্প।
সব মিলিয়ে ভারতীয় দলে অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যের মিশেল রাখা হয়েছে। সূর্যকুমার যাদবের নেতৃত্বে তরুণরা কেমন খেলেন, শুভমন গিলের সহ-অধিনায়কত্বে দল কতটা ছন্দ খুঁজে পায়— এখন তাকিয়ে থাকবে গোটা দেশ।

