অল্প রান পুঁজি করেও অসাধারণ কামব্যাক রোহিতদের

ফরম্যাট যাই হোক, জসপ্রীত বুমরা যে বর্তমানে বিশ্বের সেরা বোলার, এ বিষয়ে কোনও তর্ক হতে পারে না। নিউ ইয়র্কের পিচ নিয়ে আশঙ্কার শেষ নেই। সেটাই হল। ব্যাটারদের শট সিলেকশন, কিছুটা খলনায়ক পিচও। কিন্তু দলে বুমরা রয়েছে, ভারতীয় শিবির তা ভোলেনি। সেই বিশ্বাসটা ছিলই। চোটের জন্য গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলতে পারেননি জসপ্রীত বুমরা। নিউ ইয়র্কে নিউ মিশন। বিশ্বকাপে টানা দু-ম্যাচে জয় ভারতের। দু-ম্যাচেই সেরার পুরস্কার জিতে নিলেন জসপ্রীত বুমরা। মাত্র ১১৯ রানের পুঁজি নিয়ে পাকিস্তান বধ ভারতের। হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এটিই ভারতের সবচেয়ে কম রানের পুঁজি নিয়ে জয়।

নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের গ্যালারি না ভারতের কোনও ভেনু, ধরতে পারবেন না। প্রত্যাশা ছিল বিরাট শো-য়ের। সে কারণেই তো বেশি করে মাঠ ভরানো। টি-টোয়েন্টি মানেই চার ছয়ের খেলা! ক্রিকেট প্রেমীরা সেটাই ভালো বাসেন। বল হাতেও যে একইরকমের আনন্দ উপহার দেওয়া যায়, সেটাই দেখিয়ে দিলেন জসপ্রীত বুমরা। বৃষ্টির কারণে অনেকটাই দেরিতে শুরু হয় ম্যাচ।

আবহাওয়া, পিচের আর্দ্রতার কথা ভেবে টস জিতে ফিল্ডিং নিতে ভাবতে হয়নি পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমকে। ভারত এক ওভার ব্য়াট করার পরই ফের বৃষ্টি। প্রথম ওভারে স্ট্রাইক পাননি বিরাট কোহলি। বৃষ্টির পর স্ট্রাইকে বিশ্বের সেরা ব্যাটার। চোখ ধাঁধানো একটা কভার ড্রাইভে খাতা খোলেন। কিন্তু এক বলের ব্যবধানে বিরাট আউট! পাকিস্তান শিবিরে যতটা উচ্ছ্বাস, ভারতীয় সমর্থকদের মধ্যে তার চেয়ে অনেক বেশি হতাশা। তবে নিউ ইয়র্কের মঞ্চ মাতালেন ঋষভ পন্থ। তাঁর একটা দুর্দান্ত ইনিংসেও মাত্র ১১৯ রানেই অলআউট ভারত।

ম্যাচ জিতলেও একটা বিষয় অস্বীকার করার জায়গা নেই, ভারতীয় ব্যাটিং ব্যর্থ। শট সিলেকশনে প্রচুর ভুল হয়েছে। ব্যাটারদের সেই ব্যর্থতা ঢেকে দিল বোলিং আক্রমণ। নতুন বলে বুমরাকে আক্রমণে আনেননি রোহিত। প্ল্যান ছিল অন্য। বুমরা আক্রমণে আসতেই সাফল্য। প্রথম স্পেলে ২ ওভারে ৯ রান দিয়ে ১ উইকেট। কিন্তু সেকেন্ড স্পেলের ১ ওভারই টার্নিং পয়েন্ট হয়ে দাঁড়াল। নতুন স্পেল শুরু করেন সেট ব্যাটার মহম্মদ রিজওয়ানকে বোল্ড করে। মাত্র ৩ রান দিয়ে ১ উইকেট।

পাকিস্তানের কাছে ধীরে ধীরে অঙ্কটা দাঁড়ায় ৩ ওভারে ৩০ রান। এরপর ২ ওভারে ২১। ইনিংসের ১৯তম ওভারে মাত্র ৩ রান দিয়ে ১ উইকেট বুমরার! শেষ ওভারে পাকিস্তানের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৮ রান। ম্যাচের ভাগ্য তখন অর্শদীপের ‘বাঁ’ হাতে। ইমাদ ওয়াসিম লেগ সাইডে সরছিলেন। আর তাতেই ফাঁদে পড়লেন। অর্শদীপ সিংও তাঁকে ফলো করেন। বুট নিশানা করে বল, কট বিহাইন্ড হন ইমাদ। ৫ বলে টার্গেট দাঁড়ায় ১৮! এরপর ৩ বলে ১৬। নাসিম শাহ বাউন্ডারি মারেন। অঙ্ক ২ বলে ১২। বাউন্ডারি আসতেই ভারতের জয় কার্যত নিশ্চিত হয়ে যায়। সেখান থেকে ওয়াইড-নো ছাড়া ভারতের হার হত না।

বুমরা ৪ ওভারে মাত্র ১৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন। তাঁকে যোগ্য সহায়তা হার্দিক, অর্শদীপ সহ বাকি বোলারদের। টানা দু-ম্যাচ জিতে সুপার এইটের দৌড়ে জায়গা মজবুত করল ভারত। তেমনই পাকিস্তান টানা দু-ম্যাচ হারায় পরিস্থিতি সঙ্গীন। ভারত-আমেরিকা দু-দলেরই ৪ পয়েন্ট করে রয়েছে। ফলে পাকিস্তান গ্রুপ পর্বেই ছিটকে গেলে অবাক হওয়ার নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

12 − 4 =