ভারতের প্রখ্যাত কুস্তিগির ও অলিম্পিক পদকজয়ী সুশীল কুমারের জন্য বড় ধাক্কা এল দেশের শীর্ষ আদালতে। সাগর ধনখড় খুন মামলায় তাঁর জামিন সুপ্রিম কোর্ট বুধবার খারিজ করে দিয়েছে। বিচারপতি সঞ্জয় করোল ও বিচারপতি প্রশান্ত কুমার মিশ্রের বেঞ্চ দিল্লি হাই কোর্টের দেওয়া জামিন বাতিল করে সুশীলকে এক সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন। নিহত কুস্তিগির সাগরের বাবা অশোক ধনখড় এই জামিনের বিরোধিতা করে আবেদন করেছিলেন, যা আদালত মঞ্জুর করেছে।
মামলার শুনানিতে নিহতের পক্ষের আইনজীবী ছিলেন সিদ্ধার্থ মৃদুল এবং সুশীলের হয়ে সওয়াল করেন মহেশ জেঠমলানী। মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ৪ মে রাতে দিল্লির ছত্রশল স্টেডিয়ামের পার্কিং লটে সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে কুস্তিগির সাগর ধনখড়কে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। ঘটনায় সুশীল কুমারসহ আরও দু’জন অভিযুক্ত। খুনের পর সুশীল প্রায় ১৮ দিন পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড ও হরিয়ানার বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে ছিলেন। অবশেষে ২৩ মে দিল্লি পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পরই রেলওয়েজ় তাঁকে নিলম্বিত করে।
২০২২ সালের অক্টোবরে দিল্লির এক আদালত সুশীল এবং আরও ১৭ জনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় চার্জ গঠন করে, যার মধ্যে হত্যা, দাঙ্গা, ষড়যন্ত্র ও অপহরণের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। দিল্লি পুলিশের চার্জশিটে সাগর ধনখড় হত্যাকাণ্ডের মূল চক্রী হিসেবে সুশীল কুমারের নাম উল্লেখ করা হয়। অভিযোগ, তিনি কুস্তি মহলে নিজের প্রভাব খাটিয়ে সাগরকে খুন করান। তবে সুশীল শুরু থেকেই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
গত মার্চ মাসে জামিনের আবেদন করতে গিয়ে সুশীল আদালতে জানান, তিনি ইতিমধ্যেই সাড়ে তিন বছর জেলে কাটিয়েছেন এবং নিকট ভবিষ্যতে মামলার রায় হওয়ার সম্ভাবনা নেই। সেই যুক্তি শুনে দিল্লি হাই কোর্ট তাঁকে জামিন দেয়। কিন্তু নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টে সেই জামিনের বিরুদ্ধে আবেদন করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট অবশেষে সেই আবেদন মঞ্জুর করে হাই কোর্টের সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে।
এই রায়ের ফলে সুশীল কুমারকে ফের জেল হেফাজতে ফিরতে হচ্ছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তাঁকে আত্মসমর্পণ করতে হবে। দেশের ক্রীড়াজগতে একসময় যিনি সাফল্যের প্রতীক ছিলেন, সেই সুশীল কুমারের জন্য এ ঘটনা নিঃসন্দেহে এক বড় আইনি ও ব্যক্তিগত বিপর্যয়।

