ইন্ডিয়ান ওয়েল বটলিং প্ল্যান্টে এক শ্রমিকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য

দুর্গাপুরের ইন্ডিয়ান ওয়েল বটলিং প্ল্যান্টে এক শ্রমিকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়ায় শুক্রবার রাতে। এদিন জেনারেল শিফটে কাজে এসেছিলেন শ্যামপুরের বাসিন্দা কাঞ্চন রায় (৫৮) নামে হ্যান্ডেলিং ডিপার্টমেন্টের সুপারভাইজার পদে নিযুক্ত শ্রমিক। সন্ধে ৫ টায় তার কারখানা থেকে ছুটি হওয়ার কথা। কিন্তু, তারপরেও বাড়ি না ফেরায় পরিবার লোকজন তাঁর খোঁজ শুরু করে। পরিবার তরফ থেকে কারখানায় খবর দেওয়া হলে খোঁজাখুঁজি শুরু করে কর্তৃপক্ষের লোকজনেরা। দীর্ঘ খোঁজের পর কারখানার বাথরুমে কাঞ্চন রায়ের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পায় শ্রমিকেরা। খবর দেওয়া হয় স্থানীয় কোকওভেন থানার। এরপরই পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করে। তবে, পুলিশ কারখানা থেকে দেহ নিয়ে যেতে গেলে বাধা দেয় শ্রমিকেরা। শ্রমিকদের দাবি, অবিলম্বে কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে আশ্বাসন দিতে হবে। বারংবার একই রকম ঘটনা ঘটছে কারখানার ভেতরে, কর্তৃপক্ষ কোনো গুরুত্ব দিচ্ছে না। কর্তৃপক্ষের চরম গাফিলতি জন্য এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। মৃতের দাদা অভিযোগ করেন, ভাই বাড়িতে গিয়ে বলত, বারংবার কারখানায় কাজের জন্য মানসিক ও শারীরিকভাবে চাপ দেওয়া হত। যদিও এই বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ তথা ইন্ডিয়ান ওয়েল বটলিং প্ল্যান্টে হ্যান্ডেলিং অফিসার হিমাংশু সিং মুখে কুলুপ এঁটেছেন। প্রশ্ন করলেও কোনো উত্তর দেননি তিনি। ঘটনার কথা স্বীকার করে ঠিকাদার সংস্থা আধিকারিক সান ইসলাম জানান, পুরনো শ্রমিক, যথেষ্ট পরিশ্রমী ছিলেন। কারখানার শ্রমিকদের দাবি, মৃতের পরিবারকে অবিলম্বে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। পাশাপাশি কীভাবে এই ঘটনা ঘটল তার তদন্তের দাবি তোলেন শ্রমিকরা। চরম গাফিলতি রয়েছে কর্তৃপক্ষের বলেও অভিযোগ করে শ্রমিকরা। অবশেষে কারখানা কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে বিক্ষোভ ওঠে। পরে পুলিশ রাত্রি একটা নাগাদ মৃতদেহ উদ্ধার করে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। বিজেপির জেলা মুখপাত্র চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, দীর্ঘবছর ধরে প্রাক্তন বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের নেতৃত্বে ইন্ডিয়ান ওয়েল বটলিং প্লান্টে ক্রীতদাস প্রথা চলছে। অস্বাভাবিক চাপের মধ্যে থেকে শ্রমিকদের নিজের সংসারের তাগিদে কাজ করে যেতে হচ্ছে। এর আগেও একই ধরণের ঘটনা ঘটেছে। চাপ সহ্য করতে না পেরে অনেকেই একই পথ বেছে নিয়েছেন, কেউ কারখানার ভেতরে কেউ বা বাইরে। অনেকে কাজ ছেড়ে চলে গিয়েছেন। তিনি বলেন, ২০ জুলাই-এর মধ্যে মৃত শ্রমিকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ না দেওয়া হলে এবং দীর্ঘবছর ধরে কারখানায় একই শ্রমিক সংগঠনকে মান্যতা দেওয়ার কাজ বন্ধ না হলে, আগামী ২১ জুলাই থেকে কারখানার সামনে বৃহত্তর আন্দোলন শুরু করবে বিজেপি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 2 =