কথায় আছে, কারও সর্বনাশ তো কারও পৌষমাস।
গত জানুয়ারি মাসে লাক্ষাদ্বীপ সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশবাসীকে লাক্ষাদ্বীপে বেড়াতে আসার আবেদন করেছিলেন। ভারতীয়দের কাছে অন্যতম প্রিয় পর্যটনকেন্দ্র মালদ্বীপের সৌ¨র্য ও লাক্ষাদ্বীপে সৌ¨র্য কার্যত একই, ভৌগোলিক পরিবেশগত ভাবে দুই জায়গার যথেষ্ট সাযুজ্য আছে। এদিকে, সেই সময় মালদ্বীপ সরকারের দুই প্রতিনিধি মোদির লাক্ষাদ্বীপ ভ্রমণ নিয়ে কটাক্ষ করায় পুরো পরিবেশ বদলে যায়।
গোটা দেশের মানুষ সে সময় প্রধানমন্ত্রীর অপমানকে নিজেদের অপমান মনে করেই মালদ্বীপ বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। পাশাপাশি শুরু হয়েছিল লাক্ষাদ্বীপ ভ্রমণের নতুন ট্রেন্ড। সেই ঘটনার জেরে মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় পর্যটকরা মুখ ঘোরানোয়, তাদের সর্বনাশ হলেও, পৌষমাস হয়েছে ভারতের।
তথ্য বলছে, নিউ ট্রেন্ড তৈরি হওয়ায় লাক্ষাদ্বীপের পর্যটন শিল্পের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। দ্বীপে ক্রমশ বাড়ছে পর্যটকের সংখ্যা, দাবি প্রশাসনের। এই অবস্থায় ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের সঙ্গে লাক্ষাদ্বীপের যোগাযোগ ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। সংবাদসংস্থা এএনআই-এর সঙ্গে কথোপকথনে পর্যটন আধিকারিক ইমতিয়াজ মহম্মদ টি বি জানান, মোদির সফরে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। প্রচুর লোক লাক্ষাদ্বীপ সম্পর্কে জানতে ফোন করছেন। শুধু দেশের লোকেরা নয়, বিদেশ থেকেও বহু পর্যটক দ্বীপে বেড়াতে আসবেন বলে খবর নিচ্ছেন। লাক্ষাদ্বীপ ভ্রমণের অন্যতম আকর্ষণ ত্রু«জ ভ্রমণ। পর্যটক বাড়ায় জাহাজের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।
ইমতিয়াজ জানান, ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে অল্প কিছু বিমান সংস্থার মাধ্যমে লাক্ষাদ্বীপের সংযোগ স্থাপন হয়ে থাকে। আশা করা যায়, বিমানের সংখ্যা এবার বাড়বে। এর ফলে ভবিষ্যতে আরও বেশি সংখ্যক পর্যটক লাক্ষাদ্বীপে বেড়াতে যাবেন। কিছুদিন আগে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লাক্ষাদ্বীপ সফর গোটা বিশ্বের নজর কেড়েছে। একই কথা বললেন পর্যটন দপ্তরের আধিকারিকরাও।’
দ্বীপে বেড়াতে আসা পর্যটকরাও একই কথা বলছেন। মুম্বইয়ের বাসিন্দা অমন সিং বলেন, ‘লাক্ষাদ্বীপ আসা নিয়ে মনে একাধিক সংশয় ছিল। মোদি ঘুরতে আসার পরেই সব সংশয় ঝেড়ে ফেলি। দিল্লির বাসিন্দা সুমিত আনন্দ বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর লাক্ষাদ্বীপের ছবি, ভিডিও দেখার পরেই এখানে আসব বলে ঠিক করি।’
প্রধানমন্ত্রী মোদি জানুয়ারি মাসে লাক্ষাদ্বীপের সাদা বালুতটে, নীল জল আর আকাশের ছবি পোস্ট করেন এক্স হ্যান্ডেলে। ক্যাপশানে লেখেন, ‘সাহসী অভিযানকে আলিঙ্গন করতে চান যিনি,‘লাক্ষাদ্বীপ তাঁর তালিকায় থাকবেই। তারপর মালদ্বীপের প্রতিনিধিদের কটাক্ষে, লাক্ষাদ্বীপ নিয়ে মানুষের কৌতূহল এক লহমায় বেড়ে যায়।