দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে সহজেই জয় পেল ভারত। জয় যে সহজেই আসবে, তা প্রথম ইনিংসের পর একপ্রকার নিশ্চিত হয়েছিল। ওয়ান্ডার্সে প্রথমে টিম ইন্ডিয়া করে ২৮৩ রান। যা টি-টোয়েন্টিতে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। শুধু দেখার ছিল এই বিরাট রানের বোঝা মাথায় নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা কতদূর লড়াই করতে পারে। শেষ পর্যন্ত তারা থামল ১৪৮ রানে। চতুর্থ টি-টোয়েন্টি ভারত জিতল ১৩৫ রানে। সেই সঙ্গে ৩-১ ব্যবধানে জিতে সিরিজও পকেটে পুরে নিলেন সূর্যকুমাররা।
এদিন ওয়ান্ডার্সে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেন সূর্য। ছোট মাঠ, বল অনায়াসে ব্যাটে আসছে। অর্থাৎ ব্যাটারদের স্বর্গরাজ্য। আর সেখানে ভয়ংকর সুন্দর ব্যাটিং করলেন তিলক-সঞ্জুরা। সিরিজে ইতিমধ্যেই ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল ভারত। ফলে সিরিজ হারের চাপ ছিল না। বরং উলটে ভারতীয় ব্যাটাররা নাজেহাল করে দিলেন প্রোটিয়াদের। শুরুটা করেছিলেন অভিষেক শর্মা। ১৮ বলে ৩৬ রান করে তিনি আউট হয়ে গেলেও ঝড়ের পূর্বাভাস ছিলই। সেটা যে মারাত্মক সাইক্লোনে পরিণত হবে, তা তখনও টের পাওয়া যায়নি। সেটাই করে গেলেন তিলক-সঞ্জুরা। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সিরিজের শেষ ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন। এই সিরিজের প্রথম ম্যাচেও ছিল সেঞ্চুরি। আবার সিরিজটা শেষও করলেন শতরান দিয়ে। ৫৬ বলে ১০৯ রান করেন তিনি। ইনিংসে ছিল ৬টি চার, ৯টি ছয়। অন্যদিকে আগের ম্যাচের শতরানের রেশ কাটাতে না কাটাতেই ফের সেঞ্চুরি হাঁকালেন তিলক বর্মা। দুজনের মধ্যে বেশি বিধ্বংসী ছিলেন তিনিই। মাত্র ৪৭ বলে ১২০ রান করেন তিনি। মারেন ৯টি চার ও ১০টি ছয়। একসময় মনে হচ্ছিল, ভারতীয়দের মধ্যে দ্রুততম সেঞ্চুরি করে ফেলবেন তিনি। সেটা অবশ্য হল না। কিন্তু সঞ্জুর সঙ্গে জুটিতে তুললেন ২১০ রান। যা রেকর্ড। শেষ পর্যন্ত ভারতের ইনিংস থামে ২৮৩ রানে।
জবাবে অর্শদীপ সিংয়ের বিষাক্ত সুইংয়ে শুরু থেকেই চাপে পড়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার। বোলিংয়ের সময় সঞ্জু-তিলকদের দাপটের সামনে তাদের রীতিমতো অসহায় মনে হচ্ছিল। ব্যাটিংয়ের সময়ও সেই ছবিটাই ধরা পড়ল। প্রথম ওভারেই অর্শদীপের বলে বোল্ড হলেন রেজা হেন্ড্রিকস। দ্বিতীয় ওভারে হার্দিকের বলে ফিরলেন রায়ান রিকেলটন। অধিনায়ক আইডেন মার্করাম আউট হলেন ৮ রানে। তার পরেই হেনরিক ক্লাসেনকে ফিরিয়ে দেন অর্শদীপ। শেষ পর্যন্ত হ্যাটট্রিক না হলেও প্রোটিয়াদের ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড ওখানেই ভেঙে যায়। ট্রিস্টান স্টাবস ও ডেভিড মিলার অবশ্য জুটি বেঁধে হার বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ততক্ষণে ম্যাচ প্রায় হাতের বাইরে। আর রবি বিষ্ণোই আর বরুণ চক্রবর্তীর স্পিন গোলকধাঁধায় তাঁরা ফিরে যাওয়ার পর ভারতের ম্যাচজয় ছিল সময়ের অপেক্ষা। শেষ পর্যন্ত ১৪৮ রানে থামল দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। ১৩৫ রানে ম্যাচ জেতার পাশাপাশি সিরিজও জিতে নিল ভারত।