অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়
২৫ বছর পর হারের মধুর বদলা। পরপর দু’বার আইসিসি ট্রফি জয় টিম ইন্ডিয়ার। ফাইনালে হিট রোহিতই। গত বছর জুন মাসে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত। ৯ মাসের মধ্যে অধিনায়ক হিসাবে আরও একটি আইসিসি ট্রফি জিতলেন রোহিত শর্মা। গ্রুপ পর্বে কিউয়িদের হারানোর পর ফাইনালেও বধ। এক যুগ পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ঘরে তুলল টিম ইন্ডিয়া। এর আগে ২০০২ সালে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও ২০১৩ সালে মহেন্দ্র সিং ধোনি এই ট্রফি জিতেছিলেন। ২৫ বছর আগে ২০০০ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের কাছে হারতে হয়েছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভারতকে। মধুর বদলাও নিয়ে ফেলল ভারত। নিউজিল্যান্ডের ২৫১ রানের জবাবে ৪৯ ওভারে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত। টিম ইন্ডিয়া জেতে ৪ উইকেটে। ভারতের হয়ে ওপেনিং করতে নেমে অনবদ্য ৭৬ রানের ইনিংস খেলেন রোহিত শর্মা। ৮৩ বলের এই ইনিংসে ৭ চার ও ৩ ছক্কা ছিল তাঁর। পরপর এই ট্রফি জয়ে যাবতীয় সমালোচনার জবাবও দিয়ে দিলেন হিটম্যান। রোহিতের হিটে যোগ্য সঙ্গ দিতে থাকেন শুভমন গিল। তিনি ফেরেন ৩১ রান করে। তবে ফাইনালেই ফেল করলেন বিরাট। ফেরেন মাত্র ১ রান করে। তবে হাল ধরেন শ্রেয়স আইয়ার ও কেএল রাহুল। শেষপর্যন্ত শ্রেয়স আইয়ার করেন ৪৮ রান। এরমধ্যে ২ চার ও ২ ছয়। শ্রেয়স ফিরলেও মাটি কামড়ে থাকেন কেএল রাহুল। শেষপর্যন্ত ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। জয়ের দোরগোড়ায় হার্দিক পান্ডিয়া ১৮ রানে ফিরে গেলেও জাদেজাকে সঙ্গী করে জয় পেতে কোনও অসুবিধে হয়নি ভারতের। এরমধ্যে অক্ষর প্যাটেল করেন ২৯ রান। রবীন্দ্র জাদেজা অপরাজিত থাকেন ৯ রানে।
রবিবার ফাইনালে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার। প্রথম ৭.৪ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫৭ রান করে কিউয়িরা। এরপর উইল ইয়াংকে এলবিডব্লিউ করে জুটি ভাঙেন বরুণ চক্রবর্তী। মুহূর্তেই নিউজিল্যান্ডের স্কোর হয়ে যায় ১২.২ ওভারে ৩ উইকেটে ৭৫ রান। প্রথম বলে ছন্দে থাকা রাচীন রবীন্দ্রকে বোল্ড করেন কুলদীপ যাদব। ২৯ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৩৭ রান করেন রাচীন। এক ওভার পর কেইন উইলিয়ামসনকে কট অ্যান্ড বোল্ড করেন কুলদীপ। ১৩ তম ওভারের দ্বিতীয় বলে উইলিয়ামসন যেভাবে উইকেট উপহার দিয়েছেন, তাতে হতাশায় উইকেটের ওপর লাথি মেরেছেন। কিউয়ি এই ব্যাটার করেছেন ১৪ বলে ১১ রান। পাঁচে নামা টম লাথামও ইনিংস বড় করতে পারেননি (৩০ বলে ১৪ রান)। ফেরান রবীন্দ্র জাদেজা। ২৩.২ ওভারে ১০৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে যখন নিউজিল্যান্ড বিপাকে, তখন দলকে টেনে তোলেন গ্লেন ফিলিপস ও ড্যারিল মিচেল। এই জুটি অবশ্য বড় হতে পারত না। ক্যাচ মিস করেন রোহিত। মিচেলের রান তখন ৩৮। ঠিক তার পরের ওভারে জীবন পান ফিলিপস। ৩৬ তম ওভারের শেষ বলে ডিপ স্কয়ার লেগ থেকে দৌড়ে এসে বল স্পর্শ করেও তালুবন্দি করতে পারেননি শুভমন গিল। এখানে বোলার রবীন্দ্র জাদেজা। ফিলিপসের স্কোর তখন ২৭। জীবন পেয়েও ফিলিপস ইনিংসটা লম্বা করতে পারেননি (৩৪)। পঞ্চম উইকেটে ফিলিপস-মিচেলের জুটিতে এসেছে ৮৭ বলে ৫৭ রান। এরপর ১০১ বলে ৩ চারে ৬৩ রান করে ফেরেন মিচেল। ব্রেসওয়েল ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত খেলেছেন। ৪০ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৫৩ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। ওয়ানডেতে এটা তাঁর প্রথম ফিফটি। ব্রেসওয়ের ক্যামিও ফিফটিতে শেষ ৫ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে নিউজিল্যান্ড ৫০ রান যোগ করে। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৫১ রান করে কিউয়িরা। ভারতের বরুণ, কুলদীপ দুজনেই দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। দুজনেই ১০ ওভার বোলিং করেছেন। বরুণ ও কুলদীপ খরচ করেন ৪৫ ও ৪০ রান।