ভারতের জয় ৩০ রানে তবে এখনো চিন্তায় অধিনায়কের ফর্ম

আহমেদাবাদের এই মাঠ ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে আবেগের নাম। ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনালের সেই স্বপ্নভঙ্গ এখনও মনে দাগ কেটে আছে। তাই আজ থেকে মাস তিনেক পরে এখানেই যদি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হাতে তোলার ছবি আঁকা যায়, তবে সেই যন্ত্রণার অনেকটাই মুছে যাবে—এমনই আশা দেশের ক্রিকেটভক্তদের। বাস্তবিকই, এই মুহূর্তে টিম ইন্ডিয়ার প্রতিটি ম্যাচ, প্রতিটি ইনিংস বিচার হচ্ছে আগামী বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতির মানদণ্ডে। কোন কম্বিনেশন কাজ করছে, কোথায় ঘাটতি রয়ে যাচ্ছে—হিসেব চলছে শুধু থিঙ্ক ট্যাঙ্কে নয়, সমর্থকদের মনেও।
আহমেদাবাদে শেষ ম্যাচ জিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ হারিয়ে ট্রফি ক্যাবিনেটে আরেকটি পালক জুড়েছে ভারত। তার থেকেও বড় কথা, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের একটি পরিষ্কার ব্লু-প্রিন্ট যেন সামনে চলে এসেছে। হার্দিক পাণ্ডিয়া, সঞ্জু স্যামসনের মতো ক্রিকেটাররা নিজেদের জায়গা পোক্ত করেছেন। বিশেষ করে বরুণ চক্রবর্তীর স্পিন-জাদু এই ম্যাচে যেন আলাদা করে নজর কাড়ল। তাঁর ঘূর্ণিতে প্রোটিয়ারা যেভাবে ধসে পড়ল, তাতে বিশ্বকাপ অভিযানে তাঁর বড় ভূমিকা থাকবে বলেই মনে হচ্ছে।
যদিও ম্যাচের শুরুটা দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য মোটেই খারাপ ছিল না। কুইন্টন ডি’কক শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিলেন। অর্শদীপ সিংয়ের এক ওভারে ২৩ রান তুলে তিনি বুঝিয়ে দেন, সিরিজে সমতা ফেরানোর স্বপ্ন এখনও তাঁদের চোখে। কিন্তু বরুণ চক্রবর্তী আর জসপ্রীত বুমরাহ থাকলে ভয় কিসের? রেজা হেন্ডরিকসকে ফিরিয়ে প্রথম ধাক্কা দেন বরুণ। এরপর ডি’ককের ঝড় থামান বুমরাহ—৩৫ বলে ৬৫ রানের ইনিংস শেষ হয় তাঁরই হাতে ক্যাচ দিয়ে। এরপর আর কেউ প্রোটিয়াদের জয়ের স্বপ্ন দেখাতে পারেননি। ডেভিড মিলার ছিলেন নিজের ছায়া, আইডেন মার্করাম ও ডোনোভান ফেরেরাকেও ধাঁধায় ফেলেন বরুণ। শেষ পর্যন্ত ৫৩ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন তিনি, বুমরাহর ঝুলিতে ২টি। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ডেওয়াল্ড ব্রেভিসকে ফেরান হার্দিকও। সব মিলিয়ে ৮ উইকেটে ২০১ রানে থামে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস।
তবে এত সাফল্যের মাঝেও দুশ্চিন্তা রয়েই গেল। অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবের অফ ফর্মের ধারা এই ম্যাচেও কাটল না। মাত্র ৫ রানে আউট হয়ে ফের প্রশ্নচিহ্নের মুখে তিনি। বিশ্বকাপের আগে তাঁর ফর্মে ফেরা যে টিম ইন্ডিয়ার জন্য ভীষণ জরুরি—সে কথা আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না। কবে তিনি পুরনো সূর্যকুমারে ফিরবেন, সেটাই এখন টিম ইন্ডিয়ার সবচেয়ে ‘গম্ভীর’ প্রশ্ন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 − 3 =