অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ ফাইনালে পাকদের কাছে লজ্জার হার ভারতের

রেকর্ডের দিনে ভারতীয় ব্যাটিং বিপর্যয় !  রবিবার ট্রফির স্বপ্ন বুকে নিয়েই মাঠে নেমেছিল অনূর্ধ্ব-১৯ ভারতীয় দল। কিন্তু দিনের শেষে সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। কিছুদিন আগেই ইমার্জিং এশিয়া কাপে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সুপার ওভারে হেরে হতাশ হয়েছিল জিতেশ শর্মার নেতৃত্বাধীন ভারত। এবার যুব এশিয়া কাপের ফাইনালেও একই পরিণতি আয়ুষ মাত্রের দলের। আইসিসি অ্যাকাডেমির মাঠে প্রতিবেশী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ একতরফা ম্যাচে ১৯১ রানে হার স্বীকার করতে হল যুব ভারতীয় দলকে।
ফাইনালে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান। শুরু থেকেই ভারতীয় বোলারদের উপর দাপট দেখান ওপেনার সমীর মিনহাস। একপ্রান্ত আগলে রেখে আরেক প্রান্তে সতীর্থদের নিয়ে এগিয়ে যান তিনি। ভারতের বোলাররা শুরুতে কিছুটা চাপে থাকলেও, মাঝের ওভারগুলিতে উইকেটের খোঁজে মরিয়া হয়ে ওঠেন। কিন্তু সমীরের সামনে কার্যত অসহায় দেখায় ভারতীয় আক্রমণ।
সমীর মিনহাসের ইনিংস ছিল অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটের ইতিহাসে স্মরণীয়। ১১৩ বলে ১৭২ রানের ঝোড়ো ইনিংসে তিনি ভেঙে দেন একাধিক রেকর্ড। অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে সর্বাধিক রানের নতুন নজির গড়েন তিনি। ভেঙে যায় ২০১২ সালে ভারতের বিরুদ্ধে সামি আসলামের করা ১৩৪ রানের রেকর্ড। এখানেই থামেননি সমীর। গোটা টুর্নামেন্টে মোট ৪৭১ রান করে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ইতিহাসে সর্বাধিক রান সংগ্রাহকও হয়ে যান তিনি, যা আগে ছিল সামি আসলামের দখলে (৪৬১ রান)।
মুলতানের এই ব্যাটারের ইনিংসে ছিল ১৭টি চার এবং ৯টি বিশাল ছক্কা। এক সময় মনে হচ্ছিল, ডবল সেঞ্চুরিও বুঝি হাতছাড়া হবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দ্বিশতরান থেকে ২৮ রান দূরে দীপেশ দেবেন্দ্রনের বলে ছয় মারতে গিয়ে কণিষ্ক চৌহানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। সমীর যখন আউট হন, তখন পাকিস্তানের রান ৩০২। শেষ দিকে ভারতীয় বোলারদের কিছুটা প্রত্যাবর্তনে পাকিস্তান থামে ৮ উইকেটে ৩৪৭ রানে। সমীর ছাড়া আহমেদ হুসেন করেন ৫৬ রান। ভারতের হয়ে দীপেশ দেবেন্দ্রন ৩ উইকেট নিলেও খরচ করেন ৮৩ রান। হেনিল প্যাটেল ও খিলান প্যাটেল পান ২টি করে উইকেট।
৩৪৮ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ঝোড়ো শুরু করেছিলেন বৈভব সূর্যবংশী। প্রথম চার বলেই ওঠে ১৯ রান। কিন্তু সেই ঝাঁঝ সামলে দ্রুত ম্যাচে ফেরে পাকিস্তান। মহম্মদ সায়ামের বলে আয়ুষ মাত্রে ফিরে যান দ্রুত। জীবন পেয়েও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি বৈভব। এরপর একে একে সাজঘরের পথে হাঁটেন অ্যারন গর্গ, বিহান মালহোত্রা, বেদান্ত ত্রিবেদী, অভিজ্ঞান কুণ্ডু, কণিষ্ক চৌহান ও খিলান প্যাটেলরা। শেষ দিকে দীপেশ দেবেন্দ্রনের লড়াইয়ে ভারত দেড়শো পার করলেও, শেষ পর্যন্ত অলআউট হয়ে যায় ১৫৬ রানে।
এর ফলে ১৯১ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় তুলে নিয়ে যুব এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন হল পাকিস্তান। আর ভারতীয় শিবিরে রইল আরেকটি ফাইনালের হতাশা ও একরাশ আত্মসমালোচনার সুযোগ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

9 − six =