পাকিস্তানকে ৯০ রানে উড়িয়ে দিয়ে আগেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছিল অনূর্ধ্ব-১৯ ভারতীয় দল। মঙ্গলবার দুবাইয়ে সেই গ্রুপ পর্বের ‘নিয়মরক্ষা’র ম্যাচেই যেন আগুন ঝরাল আয়ুষ মাত্রের দল। অভিজ্ঞান কুণ্ডুর ঐতিহাসিক ডবল সেঞ্চুরি এবং দীপেশ দেবেন্দ্রনের বিধ্বংসী বোলিংয়ের দাপটে মালয়েশিয়াকে ৩১৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে দিল ভারত।
টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি ভারতের। অধিনায়ক আয়ুষ মাত্র (১৪) ও বিহান মালহোত্রা (৭) দ্রুত ফিরে যান। তবে চাপের মধ্যেও নিজের স্বভাবসিদ্ধ আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দলের রানের চাকা সচল রাখেন বৈভব সূর্যবংশী। মাত্র ২৬ বলেই হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন তিনি। অন্যপ্রান্তে বেদান্ত ত্রিবেদীও দায়িত্বশীল ইনিংস খেলেন। ৯০ রানের ইনিংসে ভারতের ভিত মজবুত করে দেন তিনি।
কিন্তু দিনের আসল নায়ক ছিলেন অভিজ্ঞান কুণ্ডু। পাঁচ নম্বরে নেমে যা করলেন, তা ছোটদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ইতিহাস হয়ে রইল। ১২৫ বলে ২০৯ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলেন ১৭ বছরের এই বাঁ-হাতি ব্যাটার। স্ট্রাইক রেট ছিল ১৬৭.২০। ১৭টি চার ও ৯টি ছক্কায় সাজানো তাঁর ইনিংস। মাত্র ৪৪ বলে হাফসেঞ্চুরি করার পর পরবর্তী ৩৬ বলেই শতরান পূর্ণ করেন অভিজ্ঞান। এরপর আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠে তাঁর ব্যাট। ১২১ বলে ডবল সেঞ্চুরিতে পৌঁছে ছোটদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম ভারতীয় ব্যাটার হিসেবে এই নজির গড়েন তিনি। পাঁচ নম্বরে নেমে ডবল সেঞ্চুরি—এই ‘অসাধ্য’ কাজই অনায়াসে করে দেখান অভিজ্ঞান।
নির্ধারিত ৫০ ওভারে ভারত তোলে পাহাড়প্রমাণ ৪০৮ রান। জবাবে ৪০৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে একেবারেই দাঁড়াতে পারেনি মালয়েশিয়া। ভারতীয় বোলারদের সামনে কার্যত আত্মসমর্পণ করে তারা। মাত্র ৯৩ রানেই গুটিয়ে যায় মালয়েশিয়ার ইনিংস। দীপেশ দেবেন্দ্রনের বোলিং তাণ্ডব ছিল চোখে পড়ার মতো। ২২ রান দিয়ে ৫ উইকেট তুলে নেন তিনি। উদ্ধব মোহন নেন ২৪ রানে ২ উইকেট। কিষাণ কুমার, খিলান প্যাটেল ও কণিষ্ক চৌহান নেন একটি করে উইকেট। মালয়েশিয়ার হয়ে হামজা পাঙ্গির ৩৫ রানই ছিল সর্বোচ্চ।
এই জয়ের ফলে গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচেই জিতে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে শেষ করল অনূর্ধ্ব-১৯ ভারতীয় দল। আত্মবিশ্বাসে ভর করে এবার সেমিফাইনালের দিকেই তাকিয়ে আয়ুষ মাত্রের ভারত।

