বহুকাল ধরে জনসংখ্যার নিরিখে সবাইকে পিছনে ফেলে রেখেছিল চিন। তবে সে রের্ড এবার ভাঙল ভারত। জনসংখ্যার নিরিখে এই মুহূর্তে সবার আগে চলে এল ভারতের নাম। রাষ্ট্রসংঘের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, চিনের থেকে প্রায় ২৮ লক্ষ বেশি জনসংখ্যা ভারতের। বুধবার রাষ্ট্রসংঘের পপুলেশন ফান্ড একটি নথি প্রকাশ করে। তাতেই ২০২৩ সালের বিশ্ব জনসংখ্যা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়। যেখানে বলা হয়েছে, ভারতের জনসংখ্যা বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪২.৮ কোটি। সেখানে চিনের বর্তমান জনসংখ্যা ১৪২.৫ কোটি। অর্থাৎ চিনের থেকে ভারতের জনসংখ্যা প্রায় ২৮ লক্ষ বেশি। আর জনসংখ্যার নিরিখে চিনের পরেই তৃতীয় স্থানে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা ৩৪ কোটি। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য থেকেই এই রিপোর্ট তৈরি হয়েছে বলেই সূত্রে খবর।
পাশাপশি এও জানানো হয়েছে, গোটা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশই ভারত ও চিনের জনসংখ্যা। তবে এই দুই দেশেই জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমেছে। চিনের ক্ষেত্রে এই অধোগতি ভারতের থেকে অনেকটাই বেশি। সরকারি নথি অনুযায়ী, ২০১১ সাল থেকে ভারতের বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১.২ শতাংশ। যেখানে তার আগের ১০ বছর এই হার ছিল ১.৭ শতাংশ। এদিকে চিনে গত বছর প্রায় ৮৫০,০০০ জনসংখ্যা কমেছে। ১৯৬১ সাল থেকে এই প্রথম এত হারে জনসংখ্যা কমেছে
প্রসঙ্গত, ১৯৫০ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জ সব দেশের জনসংখ্যার তথ্য সংগ্রহ করে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে শুরু করে। তখন থেকেই জনসংখ্যার নিরিখে সবাইকে পিছনে ফেলে এসেছে চিন। ২০২৩-এসে বদলালো ছবিটা।
ইউএনএফপিএ-র রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতের জনসংখ্যার ২৫ শতাংশের বয়স ০-১৪ বছরের মধ্যে, ১৮ শতাংশের বয়স ১০-১৯ বছরের মধ্যে, ২৬ শতাংশের বয়স ১০-২৪ বছরের মধ্যে, ৬৮ শতাংশের বয়স ১৫-৬৪ বছরের মধ্যে এবং ৭ শতাংশের বয়স ৬৫ বছরের বেশি।
চিনের ক্ষেত্রে এই পরিসংখ্যান ১৭ শতাংশ, ১২ শতাংশ, ১৮ শতাংশ, ৬৯ শতাংশ ও ১৪ শতাংশ। অর্থাৎ চিনে ৬৫ বছরের বেশি বয়সের জনসংখ্যা প্রায় ২০ কোটি। তবে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের গড় বয়সের ক্ষেত্রে ভারতের থেকে চিন অনেকটাই এগিয়ে। চিনে মহিলাদের আয়ু প্রায় ৮২ বছর অবধি এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে তা ৭৬। ভারতের ক্ষেত্রে তা পুরুষদের ক্ষেত্রে ৭৪ ও মহিলাদের ক্ষেত্রে ৭১ বছর।
এদিকে জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারনা, ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে দেশের অর্থনীতিতে সুবিধা হয়েছে। ইউএনএফপিএ তে ভারতের প্রতিনিধি আন্দ্রেয়া ওজনার জানান, ‘উপভোক্তা-চালিত দেশীয় অর্থনীতির উন্নয়নে দেশের তরুণ জনসংখ্যা একটি প্রধান ফ্যাক্টর হবে এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য একটি বিশাল সুযোগ নিয়ে আসবে।’