কলকাতা: বের হচ্ছিল দুর্গন্ধ। পড়শির বাড়ির দুর্গন্ধের অনুসন্ধান করতে গিয়ে বেরিয়ে এল ভয়ঙ্কর ঘটনা। এবার রবিসন স্ট্রিটের ঘটনার ছায়া বেলেঘাটায়। নব্বই বছরের মায়ের দেহ আগলে ঘরেই থাকছিলেন মেয়ে। ষাটোর্ধ্ব মেয়েও মানসিক ভারসাম্যহীন বলে প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন।
রবিনসন স্ট্রিটকাণ্ড এখনও কেউ ভুলতে পারেননি। রবিনসন স্ট্রিটের একটি বাড়ির শৌচাগার থেকে উদ্ধার হয়েছিল ৭৭ বছরের এক ব্যক্তির অগ্নিদগ্ধ দেহ। সেই বাড়িতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, মৃত ব্যক্তির ছেলে তাঁর দিদির কঙ্কালের সঙ্গে মাসের পর মাস ওই বাড়িতে রয়েছেন। দিদির কঙ্কালকে খেতেও দিতেন ভাই পার্থ দে।দুই দিন আগে হাওড়ার জগাছাতেই এরকমই ঘটনা ঘটেছিল। ৬৭ বছরের তপতী চক্রবর্তীর পচাগলা দেহ আগলে বসেছিলেন তাঁর অসুস্থ স্বামী।
বেলেঘাটার ঘটনাটিতে জানা গিয়েছে, মৃত মাকে নিয়ে কী করবেন, ভেবে পাননি মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়ে। আর তাই সেই দেহ আগলেই বসে ছিলেন তিনি। বেলেঘাটার বদন রায় লেনের ঘটনা। সোমবার প্রতিবেশীরা গন্ধ পেয়ে পুলিশে খবর দেন। তারপর পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে। জানা গিয়েছে, মৃতের নাম নমিতা ঘোষ। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পরিবারের মা ও মেয়ে ছাড়া আর কেউ নেই। বৃদ্ধার স্বামী স্বর্ণ ব্যবসায়ী ছিলেন। বছর কয়েক আগে মারা গিয়েছেন। আর্থিক সংকটের মধ্যে ছিল পরিবারটি। বৃদ্ধার বছর চৌষট্টির মেয়ে অবিবাহিত। মায়ের সঙ্গে বেলেঘাটার ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। বৃদ্ধা অসুস্থ ছিলেন। মেয়েও মানসিকভাবে সুস্থ নন। মাঝেমধ্যে বাড়ির বাইরে তাঁকে দেখা যেত। কিছুদিন আগে এলাকার কলতলায় জল নিতে এসেছিলেন ওই মেয়ে। সেসময় কলতলায় পড়ে যান। তাঁকে তুলে বাড়িতে দিয়ে আসেন প্রতিবেশীরা। তারপর থেকে তাঁকে আর বাইরে দেখা যায়নি।
এদিকে গত কয়েকদিন ধরে নমিতাদেবীর বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ বেরচ্ছিল। সন্দেহ হওয়ায় প্রতিবেশীরা বৃদ্ধার মেয়েকে এদিন প্রশ্ন করেন – তাঁর মা কোথায়? নির্বিকার মুখে জবাবে ওই মেয়ে জানান, মা মারা গিয়েছেন, কিন্তু বাড়িতেই আছেন। মেয়ের মুখে মায়ের মৃত্য়ুর খবর শুনে প্রতিবেশী সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে দেহ উদ্ধার করে। নমিতার মেয়েকেও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, দু-তিনদিন আগেই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। তবে বৃদ্ধার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।