আরামবাগ: ঝড়বৃষ্টিতে নিদ্রাহীন রাত কাটান বেশ কয়েকটি অসহায় বৃদ্ধ দম্পতি থেকে শুরু করে কয়েকটি পরিবার। এই অসহায় দৃশ্য দেখা যাচ্ছে আরামবাগ মহকুমার গোঘাটে। আবাস যোজনায় ঘর না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন গোঘাটের ওই পরিবারগুলি। জানা গেছে, গোঘাটের ওই গ্রামে বেশ কয়েকটি পরিবার ভগ্নপ্রায় মাটির বাড়িতে বসবাস করেন। অসহায় বৃদ্ধ বৃদ্ধারা মাটির বেহাল বাড়িতে নিদ্রাহীন ভাবে বসবাস করছেন। কখন ভেঙে পড়বে, এই চিন্তায় অস্থির তারা। তাদের অভিযোগ প্রত্যেক রাজনৈতিক দলই ভোট এলেই প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু আবাস যোজনায় বাড়ি হয়নি বলে অভিযোগ। গাছের শুকনো পাতা ঝরে পড়া শুরু হলেই আতঙ্কে ভুগতে থাকেন।
এবার কালবৈশাখী শুরু হবে। ত্রিপলের ছাউনি দেওয়া ভাঙাচোরা বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিতে হবে প্রতিবেশীর বাড়িতে। বৃষ্টির জল ফুটো ত্রিপল গলে ভেসে যায় চারদিক। নিদ্রাহীন রাত কাটাতে হচ্ছে তাদের। বাঁশের খুঁটি যে কোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে, ছাউনির নতুন ত্রিপল কেনারও সাধ্য নেই। ভোট এলেই শুধুই প্রতিশ্রুতি মেলে। সরকারি পাকা বাড়ি পাননি গোঘাট গ্রামের বাসিন্দারা। সরকারি আবাস যোজনা, নতুন বাড়ি, পাকা ছাদ এসব শুনলে একসময় মনে আশার সঞ্চার হত। এখন শুধু হতাশাই সম্বল। ওই গ্রামের বৃদ্ধ মানুষ আনন্দ মোহন ব্যানার্জী মনে করেছিলেন বছর দুয়েক আগে মিলেছিল আশ্বাস। আর ত্রিপলের ছাউনির ঘরে থাকতে হবে না। নিজেদের বাড়ি হবে। তাঁরা ভেবেছিলেন এবার আর কালবৈশাখী ঝড় এলে পাশের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিতে হবে না। ভরা বর্ষায় ফুটো ত্রিপল দিয়ে জল পড়বে না ঘরে। শীতের উত্তরের হাওয়া থেকেও রক্ষা পাবেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়েছে। কিন্তু আশা পূরণ হয়নি। অপরদিকে সবিতা কুণ্ডু নামে এক মহিলা বলেন, ভোটের সময় বলে ঘর হবে। কই কিছুই হয়নি।
এই বিষয়ে গোঘাট এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি বিজয় রায় বলেন, আবাস যোজনার টাকা বন্ধ রয়েছে সেটা আপামোর জনগণ জানে। কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিচ্ছে না। ২০২১ সালে বিজেপি হেরে যাওয়ায় কেবলমাত্র প্রতিহিংসার রাজনীতি করে টাকা দিচ্ছে না। আমরা চাই কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার বকেয়া টাকা পাঠাক, তাহলে এই সব অসহায় মানুষের পাকার বাড়ি হবে। সবমিলিয়ে এই সমস্ত অসহায় মানুষরা রাজনীতির টানা পোড়েনে পড়ে ভগ্নপ্রায় মাটির বাড়িতে বাস করছেন। এখন দেখার এদের পাশে দাঁড়াতে প্রশাসন কি পদক্ষেপ নেয়।