যে বিহারে মদ নিষিদ্ধ এবার সেই বিহারেই বিষমদ খেয়ে মৃত্যু হল ১৭ জনের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীনও বেশ কয়েকজন। ফলে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিহার পুলিশ সূত্রে খবর, প্রথমে এই মৃত্যুর খবর আসে বিহারের ছাপড়া থেকে। সেখানে বিষমদ খেয়ে ৪ জন ব্যক্তির মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। এক জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ছাপড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এরপর তাঁরও মৃত্যু হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতেরা হলেন, সঞ্জয় সিং, কৃপল কুমার, পরেন্দ্র রাম, বীরেন্দ্র রাম, অমিত রঞ্জন এবং গোপাল শাহ। এরপর ক্রমেই দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে তালিকা।
এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিহার বিধানসভার অধিবেশন চলাকালীন আচমকাই মেজাজ হারাতে দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে। এতটাই মেজাজ হারান যে বিরোধী বিধায়কদেরই ‘মদ্যপ’ বলে বসলেন তিনি। সূত্রে খবর, হাত উঁচিয়ে বিধানসভা কক্ষের মধ্যে নিজের আসন ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে বিরোধীদের দিকে আঙুল উঁচিয়ে যেতে দেখা যায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকে।
পাশাপাশি এও জানানো হয়, মৃতদের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পরই আসল মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে। তবে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, বিষমদকেই মৃত্যুর কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে বিষমদ কাণ্ডেই এই পাঁচজনের মৃত্যু হয় বলে মনে করছেন মৃতের পরিবারের সদস্যারাও। এদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, বেশ কয়েকজনকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর এর মাঝেও এসেছে মৃত্যুর আরও খবর। তারই জেরে তোলপাড় বিহারের রাজনৈতিক মহল। স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক জনক সিং, নীতীশ কুমারের সরকারকে এই ঘটনায় কাঠগড়ায় তোলেন। তাঁর দাবি, মৃতদের মধ্যে তিনজন তাঁর গ্রামেরই বাসিন্দা।কী ভাবে মদ-নিষিদ্ধ রাজ্যে এই ঘটনা ঘটে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
এদিন বিহার বিধানসভা অধিবেশনে লাগাতার বিজেপি বিধায়কদের আক্রমণের মধ্যেই মেজাজ হারাতে দেখা যায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে। নীতীশ কুমার বিরোধীদের উদ্দেশ্য করে বলেই বসেন, ‘আপনারাই তো মদ্যপ! আপনারা আবার কথা বলছেন কোন মুখে? ‘মুখ্যমন্ত্রীর এমন আচরণে ক্ষুব্ধ হন বিরোধী বিধায়কেরা। এরপরই স্পিকারের কাছে তাঁর ‘শাস্তি’র দাবি তোলেন। পাশাপাশি সর্বসমক্ষে ক্ষমা চাওয়ার জন্যও দাবি তোলা হয় বিজেপি বিধায়কদের তরফ থেকে। সামগ্রিক ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে বিহার বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন।