উপাচার্য নিয়োগ বিল নিয়ে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে মামলার প্রেক্ষিতে রাজ্যপালের দফতরের হলফনামা চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। আদালত সূত্রে খবর, মঙ্গলবার এই হলফনামা চান বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। সঙ্গে এও নির্দেশ দেওয়া হয়, আগামী ৪ অক্টোবরের মধ্যে এই হলফনামা জমা দিতে হবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ১৬ অক্টোবর। এখানে বলে রাখা শ্রেয়, এই ঝামেলা নতুন নয়। উপাচার্য নিয়োগের বিল ২০২২ সালের ১৫ জুন পাঠানো হয়েছিল রাজ্যপালের কাছে৷ তিনি এখনও এই নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেননি। আর তাই নিয়েই জনস্বার্থ মামলা করেন সায়ন মুখোপাধ্যায়।
এদিকে আদালত সূত্রে খবর, মঙ্গলবার এই মামলার শুনানিতে কেন্দ্রের আইনজীবীকে আদালতের তরফ থেকে প্রশ্ন করা হয়, ‘যদি সাংবিধানিক সংকট তৈরি হয় তাহলেও কি আদালত রাজ্যপালকে কোনও একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার অনুরোধ জানাতে পারে না? ডানদিকে হোক, বামদিকে হোক বা কেন্দ্রে হোক, যেখানেই হোক, কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার অনুরোধ রাজ্যপালকে আদালত জানাতে পারে কি না তা নিয়ে। সঙ্গে এ প্রশ্নও তোলা হয়, ‘এই ধরনের সাংবিধানিক পদে থাকা ব্যক্তিদের কৈফিয়ত তলব করা যায় না, সময় বেঁধে দেওয়া যায় না, কিন্তু যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণের অনুরোধও কি আদালত করতে পারে না?’ এরই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় আইনজীবীর তরফ থেকে বলা হয়, ‘সংবিধান রাজ্যপাল-সহ একাধিক সাংবিধানিক পদে থাকা ব্যক্তিকে রক্ষাকবচ দিয়েছে। তারা জবাবদিহি করতে বাধ্য নন।’ পাশাপাশি আদালতে প্রশ্ন তোলা হয়, ‘মামলাকারির রাজনৈতিক পরিচয় খতিয়ে দেখা হোক, তিনি একটি রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক। এই পরিচয় গোপন করে তিনি মামলা করেছেন। তাই এই মামলা গ্রহণযোগ্য নয়।’
এ দিকে পাল্টা সওয়াল করেন রাজ্য সরকারের আইনজীবীও। তিনি দাবি করেন, ‘একটি বিল যাওয়ার পরে রাজ্যপাল তিনটি কাজ করতে পারেন। প্রথমত, তিনি বিলে সম্মতি জানিয়ে সই করতে পারেন। দ্বিতীয়ত, তিনি পরামর্শ দিয়ে বা না দিয়ে, পুনরায় বিবেচনার জন্য বিধানসভায় ফেরত পাঠাতে পারেন। তৃতীয়ত, তিনি বিল রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে রাজ্যপাল কোনটিই করেননি।’