অন্য মামলায় পুলিশ হেপাজত নওশাদের, ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আইএসএফ বিধায়কের

কলকাতা: একাধিক থানায় একাধিক অভিযোগ ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে।বুধবারই ব্যাঙ্কশাল কোর্টে খারিজ হয়েছে একটি মামলায় জামিনের আবেদন। শুক্রবার কলকাতা লেদার কমপ্লেক্সে দায়ের হওয়া একটি মামলায় নওশাদের জামিনের আবেদন খারিজ করে ৬ দিনের পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দিল বারুইপুর আদালত। বৃহস্পতিবার নওশাদের প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট চেয়ে আদালতে আবেদন জানিয়েছিল পুলিশ।

ভাঙড়ের হাতিশালায় তৃণমূলের পার্টি অফিস ভাঙচুর, আগুন দেওয়া, তৃণমূল কর্মীদের মারধর, এলাকায় অশান্তি তৈরির চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে নওশাদ এবং আসমা খাতুনের বিরুদ্ধে। ঘটনার তদন্তে নেমে সিসিটিভি ফুটেজ এবং বিভিন্ন ভিডিয়ো ক্লিপ খতিয়ে দেখে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেই অভিযোগেই শুক্রবার তাঁদের বারুইপুর আদালতে পেশ করে লেদার কমপ্লেক্স থানার পুলিশ।

শুক্রবার আদালতে তোলার সময় আইএসএফ বিধায়ক অভিযোগ তোলেন শাসকদলের ভোটব্যাঙ্ক নষ্ট হয়েছে বলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভাঙড়ের বিধায়কের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এদিন বিধায়কের  জামিনের আবেদন খারিজ করে পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দেয় বারুইপুর আদালত। এদিকে দলীয় বিধায়কের জামিন মঞ্জুর না হওয়ায় আইএসএফ এদিন দুপুরে আদালত সংলগ্ন মাঠে বিক্ষোভ দেখায়। আইএসএফের রাজ্য কমিটির নেতা মহম্মদ সাজান লস্কর বলেন, “পুলিশ চক্রান্ত করে নওশাদ সিদ্দিকিকে ফাঁসিয়েছে। এই জামিন যে হবে না তা জানতাম। যাদের জেলে থাকার কথা তারা বাইরে আর যারা গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলে তারা জেলের ভিতরে। তবে আমাদের আইনের ওপর ভরসা আছে। আর আমরাও রাস্তায় থাকব। আমাদের নেতা জেলে আছেন, তবে হাজার হাজার কর্মী রাস্তায় আছেন।”

গত ২১ জানুয়ারি আইএসএফ-র প্রতিষ্ঠা দিবসে ধর্মতলায় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির জেরে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল আইএসএফ নেতা নওশাদ সিদ্দিকিকে। গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ১৮ আইএসএফ কর্মী-সমর্থক। সেই ঘটনায় হেয়ার স্ট্রিট থানা ও নিউ মার্কেট থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। যার ভিত্তিতে মামলা দায়ের হয়। ব্যাঙ্কশাল আদালত প্রথমে তাঁকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়। সেই মেয়াদ ফুরনোর পর আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেপাজত হয় নওশাদদের। এখন জেল হেপাজতেই রয়েছেন নওশাদ। এরইমধ্যে এবার কেএলসি থানার পুলিশ সক্রিয় হল। ভাঙড়ের হাতিশালার ঘটনায় কেএলসি থানায় একাধিক ধারায় অভিযোগ দায়ের হয়। নওশাদের আইনজীবীর বক্তব্য, একদিকে কলকাতার হেয়ার স্ট্রিট থানা ও নিউ মার্কেট থানায় অভিযোগ হয়েছে। যার ভিত্তিতে নওশাদকে গ্রেফতার করা হয় সেদিন। অন্যদিকে হাতিশালায় গোলমালের ঘটনায়ও নওশাদের নাম রয়েছে। যার ভিত্তিতে এদিন ৬ দিনের পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

নওশাদ প্রসঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “রাজনীতি করতে গেলে মাঠে নেমে রাজনীতি করতে হবে। ধর্মের অবলম্বন দিয়ে রাজনীতি করাটা ঠিক না। তাহলে বিজেপির সঙ্গে আর তফাত কোথায় রইল? আপনি ধর্মীয় নেতা হলে ধর্ম নিয়ে থাকুন। রাজনীতি করতে হলে রাজনীতির ময়দানে কাজ করতে হবে। বামেদের সঙ্গে জোট করে গোটা বাংলায় যে একটা আসন পেয়েছে, তাদের নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস ভাববে?”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − six =