মালদা: বর্ষার মরশুম মালদার গঙ্গার ফেরিঘাটগুলোতে নৌপথে যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে বৈঠক করেছিল জেলা প্রশাসন। কিন্তু প্রশাসনের সেই বৈঠকই কার্যত উপেক্ষা করে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে নৌ-চলাচল করা হচ্ছে গঙ্গার ফেরিঘাটে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকী বিভিন্ন জলযানে কোনওরকম লাইফ জ্যাকেট ব্যবহার করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। কালিয়াচক ২ ব্লকের পঞ্চানন্দপুর গঙ্গার ফেরিঘাটে নৌ পথে যাত্রী পারাপার করা নিয়েই বিস্তর অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। গঙ্গা নদীর ওপারে রয়েছে ঝাড়খণ্ড রাজ্য। প্রতিদিনই পঞ্চানন্দপুর এলাকা থেকে কয়েকশ মানুষ নৌ-পথে চলাচল করে। কিন্তু যাত্রীদের নিরাপত্তার নির্দেশ কার্যতা উপেক্ষা করেই নৌ চলাচল করছে পঞ্চানন্দপুর গঙ্গার ঘাটে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এই বিষয়টি জানতে পেরে রীতিমতো অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের সেচ ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, আমি এবং জেলাশাসক উদ্যোগ নিয়েই ফেরিঘাটগুলোর যাত্রী সুরক্ষার বিষয়ে প্রশাসনিক স্তরে বৈঠক করেছিলাম। সেখানে বিভিন্ন ফেরিঘাটের নৌ-চালক ও মালিকেরা উপস্থিত হয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও যাত্রী নিরাপত্তার বিষয়ে ঢিলে ঢালার ব্যবস্থার অভিযোগের কথা শুনতে পাচ্ছি। এক্ষেত্রে মানুষকে সচেতন হতে হবে। ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষকেও এ নিয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। আইন যদি না মানা হয় তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, কালিয়াচক ২ ব্লকের পঞ্চানন্দপুর গঙ্গা নদীর ফেরিঘাটটি অন্তত জনপ্রিয়। পঞ্চানন্দপুরে গঙ্গা নদীর ওপারে রয়েছে ঝাড়খণ্ড রাজ্য। প্রতিদিনই পঞ্চানন্দপুরের ফেরিঘাট থেকে যন্ত্র চালিত বিভিন্ন ধরনের জলযান চলাচল করে। নির্দিষ্ট ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের পারাপার করানো হয়।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যে কোনও জলপথে যাত্রীবাহী জলযানের ক্ষেত্রে লাইফ জ্যাকেট বাধ্যতামূলক রাখতে হবে। প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া যাবে না। এছাড়াও যে কোনও জলযানের মাত্রা বুঝেই তার ওপর মোটরবাইক বা অন্যান্য ছোটখাটো যানবাহন তোলা যাবে।
কিন্তু অভিযোগ উঠেছে যে, পঞ্চানন্দপুরের গঙ্গা নদীর ফেরি ঘাটে প্রশাসনের এসব নির্দেশের কোনও কিছুই মানা হচ্ছে না। যাত্রীদের সঙ্গে গবাদিপশু বোঝাই করেও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত বিপদের সম্মুখীন হয়েও যাত্রীদের বাধ্য হয়ে নদীপথে পারাপার করতে হচ্ছে।
যাত্রীদের একাংশের বক্তব্য, আমাদের কিছু করার নেই। জীবনে ঝুঁকি আছে ঠিকই। কিন্তু রুজি-রোজগারের টানে প্রতিদিনই এপার থেকে ওপার হতে হয়। পঞ্চানন্দপুর ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষ অবশ্য তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া হয় না।
পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানিয়েছেন, প্রতিটি ফেরিঘাটে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ কর্তৃপক্ষ নজরদারি চালাচ্ছে।