অভিষেকের দম থাকলে ডায়মন্ড হারবার ছেড়ে বর্ধমান বা কলকাতায় লডুক: দিলীপ

নিজস্ব প্রতিবেদন, পূর্ব বর্ধমান: তৃণমূল যত হারবে বুঝতে পারছে, ততই হিংসার ঘটনা ঘটাচ্ছে। শেষ দফার ভোটেও হিংসার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার দাবি করলেন বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ।
তাঁর দাবি, যতগুলো দফা নির্বাচন আগে হয়েছে, প্রত্যেকটি জায়গায় তৃণমূল পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের ওপর ও সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে। শেষ দফা নির্বাচনেও তৃণমূল একই কাজ করছে। সাধারণ মানুষকে ভয় দেখিয়ে চলেছে তারা। শেষ দফা নির্বাচনেও বসিরহাটে পুলিশের অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে। বাংলার মানুষ মনস্থির করে নিয়েছেন তাঁরা ঠিক জায়গায় ভোট দেবেন। আর তৃণমূল এটা বুঝতে পেরেছে, তাই অত্যাচার শুরু করেছে।
তিনি দাবি করেন, এ বছর লোকসভা নির্বাচনে সাধারণ মানুষ নিজেরা নিজেদের ভোট দিতে পেরেছে। যা গত কয়েক বছর ধরে কেউ দিতে পারেনি। যারা এতদিন বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে নিজেদের গড় বানিয়ে রেখেছিলেন সেই সমস্ত গড় এবার ভেঙে চুরমার হবে। বিজেপির বিরোধিতা করে অনেকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নামে নালিশ করে বেড়াচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী কী খাবেন না খাবেন সেই বিষয়ে যেমন নালিশ করা হচ্ছে, আবার বাংলাতে এসে তিনি কোথায় কী খাচ্ছেন সেই বিষয়েও নালিশ করা চলছে। বিরোধীরা রাজনীতি ছেড়ে এখন নালিশ করায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। নরেন্দ্র মোদি ধ্যানে বসেছেন আর সেটাকে নিয়েও রাজনীতি শুরু করেছে বিরোধীরা। নির্বাচন প্রায় শেষ আর নরেন্দ্র মোদি শক্তি সঞ্চয় করতে তিনি ধ্যানে মগ্ন হয়েছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা নরেন্দ্র মোদির ধ্যান নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছে।
কেজরিওয়ালের উদ্দেশে তিনি জানান, ভোট শেষ হয়ে গেলেই তাঁকে তিহার জেলে যেতে হবে আর সেখানে তাঁর ওজনও বাড়বে এবং মাসাজ থেকে শুরু করে অনেক সুবিধাই তাঁকে দেওয়া হবে। তিনি দাবি করেন, শিলিগুড়ি এবং দিল্লির জল সংকট নিয়ে তিনি সমাজ মাধ্যমে ভিডিও পোস্ট করেছেন যেখানে শিলিগুড়ি এবং দিল্লি দুটো জায়গাতেই পানীয় জলের পরিষেবা যে ব্যর্থ। সাধারণ মানুষ পানীয় জলটুকু পাচ্ছে না জলের জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে। মানুষকে পরিষেবা তারা দিতে পারছে না অথচ বিজেপির বিরোধিতা করছে।
নাম না করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে তিনি জানান, এখন অনেকেই জিতে আছে। চার তারিখের পর শুধু বিজেপি জিতবে। যার দম আছে, সে বাংলায় যেখান থেকে খুশি জিততে পারে। যার দম নেই সে গলি কা কুত্তা। যদি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দম থাকে তা হলে ডায়মন্ড হারবার ছেড়ে বর্ধমান বা কলকাতায় ভোটে লড়ে দেখাক। তৃণমূলের দৌড় শুধু এই রাজ্যেই। কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিভিন্ন রাজ্যে তারা নির্বাচনে লড়াই করতে গিয়েছিল। কিন্তু শেষমেশ যা হল তা সবাই জানে। বিভিন্ন জায়গায় নব্য আর আদি তৃণমূলের মধ্যে লড়াই চলছে। আগামী চার তারিখের পর সব লড়াইয়ের দফারফা হবে। তখন আর দ্বন্দ্ব হবে না সব ভাঙাগড়া শুরু হবে।
ভোটের পরেও রাজনৈতিক উত্তাপ এখনও অব্যাহত বর্ধমান শহরজুড়ে। আর মাত্র কয়েক দিনের অপেক্ষা, তারপরেই লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশ হবে। তাঁর মধ্যেই শনিবার সকালে প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে পড়লেন বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপির প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। এদিন সকালে প্রথমে বর্ধমান শহরের টাউন হল ময়দানে তিনি প্রাতর্ভ্রমণ করেন। পরে টাউনহল ময়দানে ক্রিকেট খেলেন এবং ব্যাট করেন। প্রথম প্রথম চার ছয় মারলেন, তারপরেই বোল্ড আউট হয়ে যান তিনি।
তারপর তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে সোজা চলে যান বর্ধমান শহরের বাদামতলা এলাকায় চৌধুরী মার্কেটের সামনে। সেখানে কর্মীদের সঙ্গে চায়ে পে চর্চায় মিলিত হন। এদিন দিলীপ ঘোষের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি অভিজিৎ তা, এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দু’নম্বর নগর মণ্ডলের সভাপতি দিব্যেন্দু চক্রবর্তী সহ সুধীর রঞ্জন সাউ এবং অন্যান্য কর্মী সমর্থকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two + twenty =