দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ইডেন টেস্টে ঘাড়ে গুরুতর চোট পেয়েছিলেন শুভমন গিল। প্রথমে বিষয়টিকে তেমন গুরুতর বলে মনে করা না হলেও পরে জানা যায় তাঁর ‘ডিস্ক বাল্জ’ হয়েছে, যা চিকিৎসাশাস্ত্রে হার্নিয়েটেড ডিস্ক বা স্লিপ্ড ডিস্ক নামেই পরিচিত। মেরুদণ্ডের দুটি কশেরুকার মাঝখানে থাকা নরম আবরণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বাইরে বেরিয়ে এসে স্নায়ুর উপর চাপ তৈরি করে—ফলে তীব্র ব্যথা, অসাড়তা ও নড়াচড়ার সমস্যার মতো জটিলতা দেখা দেয়।
শুভমনের ক্ষেত্রে ঠিক এমনটাই হয়েছিল। ম্যাচ শুরুর আগেই ব্যথা বাড়তে থাকে, খেলতে নেমে ব্যথা আরও তীব্র হয়। পরে ঘাড়ে টান ধরে তাঁর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। সেই কারণে তাঁকে দু’দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয়েছিল। ইডেন টেস্ট তো বটেই, পরের টেস্ট এবং এক দিনের সিরিজেও খেলতে পারেননি তিনি। চোটের চিকিৎসার জন্য প্রথমে কলকাতার একটি হাসপাতালে ভর্তি হন শুভমন। পরে বেঙ্গালুরুর বোর্ডের উৎকর্ষ কেন্দ্রে গিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে রিহ্যাব ও শারীরিক-মানসিক প্রস্তুতির মাঝে কাটান তিনি। শুভমন নিজেই জানিয়েছেন, এখন তিনি পুরোপুরি সুস্থ।
তাঁর কথায়, “এখন আমার শরীর সম্পূর্ণ ঠিক আছে। ডিস্ক বাল্জ স্নায়ুতে চাপ তৈরি করছিল। ব্যথা এতটাই ছিল যে ম্যাচের আগের দিন থেকে খেলতে কষ্ট হচ্ছিল। তবে দু’দিন হাসপাতালে থাকার পর এবং উৎকর্ষ কেন্দ্রে ট্রেনিংয়ের ফলে এখন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরতে প্রস্তুত।” এর মধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ভারত বড় ব্যবধানে জিতেছে। সেই জয়ের পর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে শুভমন মুখ খোলেন। বিশেষত পরের বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে তাঁর আত্মবিশ্বাস স্পষ্ট। সাম্প্রতিক টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভারত ২-১ ব্যবধানে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছিল।
শুভমনের মতে, বিশ্বকাপের আগে আরও দশটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ রয়েছে, যা ছন্দ এবং ধারাবাহিকতা তৈরি করতে বড় ভূমিকা নেবে। তিনি বলেন, “বিশ্বকাপের আগে আমরা কীভাবে খেলতে চাই, সেটার ছন্দ খুঁজে পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। যে কোনও দলই চায় টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার আগেই সেরা ফর্মে থাকতে।” পাশাপাশি সঠিক দল কম্বিনেশন বাছাই করাও বিশ্বের অন্যতম বড় মঞ্চে ভালো পারফরম্যান্সের চাবিকাঠি বলে মনে করেন তিনি। বিভিন্ন মাঠে শিশির পড়া বা না-পড়ার পরিস্থিতি ব্যাট-বলকে আলাদা ভাবে প্রভাবিত করে। তাই এই বৈচিত্র্যময় পরিবেশে মানিয়ে নিতে উপযুক্ত কম্বিনেশন খুঁজে পাওয়া অত্যন্ত জরুরি। শুভমনের সংযোজন—“ঠিক দল বাছাই করতে পারলে এবং ছন্দ ধরে রাখতে পারলে ভারত বিশ্বকাপে দারুণ কিছু করবে বলেই বিশ্বাস করি।”

