আমি নির্দোষ, ফাঁসানো হচ্ছে, আদালতে দাবি মানিকের

কোটি কোটি টাকা উদ্ধার বা সরাসরি চাকরি বিক্রির অভিযোগ উঠলেও প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ-অর্পিতা সহ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের দাবি তাঁরা নির্দোষ। তাঁদের ফাঁসানো হচ্ছে। এই পাশাপাশি প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, কেন মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না তা নিয়েও। একইসঙ্গে প্রশ্নএটাও যে আর কতদিন আটকে রাখা হবে? প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের করা মামলার শুনানিতে আদালতে সশরীরে হাজিরা দেন মানিক ভট্টাচার্য। আর জেল থেকে ভার্চুয়ালি হাজিরা দেন, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়।

এদিনের শুনানির সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী আদালতে জানান, গ্রেপ্তার হাওয়ার আগে থেকে নানা রোগে ভুগছেন তাঁর মক্কেল। প্রত্যুত্তরে ইডি-র আইজীবী জবাবে স্পষ্ট জানান, ‘মেডিক্যালের ব্যাপারে কিছু বলার নেই। এইমসে স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছে। ফিট বলেছে।’ পার্থর আইনজীবী দাবি করেন, এইমসের তরফে মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করতে বলা হয়েছিল। একথা শুনে বিচারক প্রশ্ন করেন, ‘জেলের ভিতরে তেমন পরিকাঠামো আছে কিনা তা নিয়ে। এরপই পার্থ বিচারককে জানান, ‘আমার পা ফুলে যাচ্ছে। এখানে পর্যাপ্ত পরিকাঠামো নেই। আমার শরীর দিনের পর দিন খারাপ হচ্ছে। এখানকার পরিস্থিতি দেখে যান। এখানে এত বন্দি আছে। আমার পা ফুলে ঢোল। যদি মরেই যাই তাহলে আর কি বিচার। যে যার মতো মিডিয়া ট্রায়াল করে যাচ্ছে। তদন্তের নামে ৮ মাস হল। আর কমাস রাখবে? ভাল থাকবেন স্যার।’

এদিকে মানিক ভট্টাচার্যের দাবি, বিচার সবার জন্য হোক। অজ্ঞাতপরিচয় কারও চিঠির ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে এদিন দাবি করেন মানিক। তিনি বিচারককে বলেন, ‘প্রত্যেকদিন আমি কোর্টে আসি, আরও একটি দিন আসার জন্য। আইন কি শুধু সিনেমাতেই হয়?’ এই পরিস্থিতিতে কোর্ট কি করে একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হচ্ছে তাও জানতে চান তিনি। এরপই তাঁ সংযোজন, ‘আমার বিরুদ্ধে যদি একটি নির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে, তাহলে আমার জামিন বাতিল হোক। নাহলে জামিন দেওয়া হোক। এমন একটা অর্ডার দিন যাতে আমি ঘুমিয়ে পড়তে পারি আর যেন না ঘুম ভাঙে।’ এদিকে মানিকের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্তও এদিন আদালতে জানান, ইডি প্রত্যেকদিন বলে জেলে গিয়ে জেরা করতে চায়। কিন্তু গ্রেপ্তারের পর থেকে খুব বেশি দিন জেলে গিয়ে জেরা করেনি ইডি। শুধুমাত্র তাপস মণ্ডলের বয়ানের ভিত্তিতে কেন অভিযোগ আনা হচ্ছে, তাও জানতে চান আইনজীবী।

এদিকে অর্পিতার দাবি, ‘আমি একটি উচ্চবংশের মেয়ে’। পাশাপাশি এও জানান, ৪ মাস একজন নির্দোষ মহিলা জেলের মধ্যে আছে। আপনার কি মনে হয় না তার সামাজিক সম্মান নষ্ট হচ্ছে?’ একইসঙ্গে অর্পিতা এও জানান, ‘আমার মা বয়স্ক। তার পাশে থাকা প্রয়োজন।’ এর প্রত্যুত্তরে বিচারক প্রশ্ন করেন ‘আপনি জামিনের আবেদন করেছেন না কেন?’ সঙ্গে বিচারক এও বলেন, ‘আপনি উকিলবাবুর সঙ্গে কথা বলুন। আবেদন করলে নিশ্চই ভেবে দেখা হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × three =