বানারহাট: রাজ্যের একের পর এক টাকা উদ্ধারের ঘটনা ঘটেই চলেছে। ভিন রাজ্য থেকে আসা গাড়ির টায়ারের ভিতর থেকে উদ্ধার হল ৯৩ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকা। সূত্রে খবর, জলপাইগুড়ি জেলার বানারহাটে রবিবার একটি গাড়ি আটক করে পুলিশ। আর এই ভিন রাজ্যের গাড়িতে করে স্টেপনি টায়ারের মধ্যে বিপুল পরিমাণ বেহিসাবি নগদ অর্থ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এরপরই পুলিশের তৎপরতায় বিলাস বহুল গাড়িতে থাকা অতিরিক্ত টায়ার থেকে মেলে মোট ৯৪ টি মোটা টাকার বান্ডিল। বানারহাট থানার অন্তর্গত তেলিপাড়া চৌপথি এলাকায় তল্লাশি চালানোর সময় উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণ টাকা। এরই সূত্র ধরে গাড়িতে থাকা ৫ ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে বানারহাট থানার পুলিশ। তবে অভিনব কায়দায় টাকা নিয়ে যাওয়ার এই কৌশল দেখে হতবাক পুলিশ আধিকারিকরাও। এরপরই এই পাঁচজনের বক্তব্যে অসঙ্গতি মেলায় গ্রেফতার করা হয় তাদের। ধৃতরা হল ইমতিয়াজ আলম (২৯), মহম্মদ তৌফিক (৩৮), মহম্মদ নওসাদক (২৮), মহম্মদ মোজাব্বিল (২৮) ও গুড্ডু রজক(২৪)। ধৃতদের মধ্যে প্রথম চারজন বিহারের বাসিন্দা এবং একজন ডালখোলার বাসিন্দা বলে বানারহাট থানার পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়।
পাশাপাশি সাংবাদিক বৈঠক করে জেলা পুলিশ এও জানায়, সূত্র মারফত খবর পেয়ে এই বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধার করা হয়। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ মাহাতো জানান, রবিবার দুপুরে আমাদের কাছে খবর আগে যে একটি গাড়িতে করে প্রচুর পরিমাণ টাকা বিহার থেকে অসমে পাচার করা হচ্ছে। এরপরই বিন্নাগুড়ি থানার তরফে এলাকায় নাকা চেকিং শুরু হয়। একইসঙ্গে পার্শ্ববর্তী থানাতেও খবর দেওয়া হয়। কালো রঙের একটি স্করপিও গাড়িকে আটক করা হয়। কিন্তু গাড়ি থেকে কোনও টাকা পাওয়া যায়নি। বানারহাট থানাতে নিয়ে গিয়ে ধৃতদের জেরা করে জানা যায় চাকার মধ্যে করে টাকা পাচার করা হচ্ছে। এরপর মেকানিক নিয়ে এসে চাকা খুলে পলিথিন ব্যাগে রাখা টাকা উদ্ধার হয়। মোট ৯৩ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকা পাওয়া গিয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।‘ সূত্রে খবর এরপর সোমবার তাদের আদালতে পেশ করা হয়। এদিকে ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
এদিকে এই ঘটনায় চাঞ্চল্যকর দাবি করেন, স্থানীয় বিধায়ক তথা বিধানসভায় বিজেপির পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা। টাকা উদ্ধার নিয়ে শাসকদল তৃণমূলকে বিঁধেছেন তিনি বলেন, ‘রাজ্যে একের পর এক দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে। অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়িসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। টাকা উদ্ধার হলেই বিজেপির দিকে আঙুল তোলে তৃণমূল। এটা কয়লা, কাঠ ও বালি পাচরের টাকা। নগদ টাকা বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ দেখাতে চাইছে যে তারা কাজ করছে। এদিকে গ্রিন করিডর করে রাজ্যে প্রভাবশালীদের বাড়িতে টাকা পাঠানো হয়।’
উল্লেখ্য, রাজ্যে একের পর এক টাকা উদ্ধাররের ঘটনায় বেশ কয়েকদিন ধরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। টাকা উদ্ধার এবং তাই নিয়ে রাজনৈতিক চাপান উতোর এখন বঙ্গ রাজনীতির অঙ্গ। এই টাকা উদ্ধার ঘিরেও তৃণমূল-বিজেপি তরজা অব্যাহত থাকবে বলেই ধারনা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।