গোপাল দলপতি ওরফে আরমান গঙ্গোপাধ্যায় ও হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের বিপুল সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে সিবিআই। যদিও গোয়েন্দাদের মতে, ওই সম্পত্তির বাইরে আরও বহু সম্পত্তি রয়েছে দু’জনের। ওই সম্পত্তির পরিমান দুই থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা হওয়াও বিচিত্র নয়।আর এই প্রেক্ষিতেই সিবিআই -এর তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে গোপাল-হৈমন্তীর এক ডজন সংস্থার মাধ্যমে পাচার হয়েছিল নিয়োগ দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা।
এখনও পর্যন্ত সিবিআই সূত্রে যে খবর মিলছে তাতে ২০১৪ সাল থেকে গোপলের সঙ্গে হৈমন্তীর পরিচয়ের সূত্র ধরে সম্পত্তি কিনতে শুরু করেন দু’জন। ওই সময় থেকেই বিভিন্ন জেলা থেকে নিয়োগ দুর্নীতির বিপুল টাকা গোপাল দলপতির কাছে আসতে শুরু করে। এই টাকা আসার পর থেকেই শুরু হয় সম্পত্তি কেনার পালা। ২০১৫ সালে গোপাল শুধু নতুন সংস্থা খোলার জন্য ও নিত্যনতুন সম্পত্তি কিনতেই নিজের নাম পরিবর্তন করে গোপাল দলপতি হন আরমান গঙ্গোপাধ্যায়। এখনও পর্যন্ত এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ও সিবিআইয়ের তরফ থেকে যে খবর মিলছে তাতে পূর্ব মেদিনীপুর সহ বিভিন্ন জেলায় নামে ও বেনামে প্রায় ২০০ বিঘা জমি ও কোথাও জমির উপর বাড়িও রয়েছে। বীরভূমে রয়েছে দু’জনের হোটেল ও গেস্ট হাউজ। হাওড়ায় বাপের বাড়ি ছাড়াও টালিগঞ্জের অদূরে বেহালার মুচিপাড়ার কাছে রাজা রামমোহন রায় রোডে একটি ফ্ল্যাটেরও হদিশ মিলেছে বলে জানাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তবে সিবিআই ও ইডির ধারনা, কলকাতা ও অন্য শহরেও বেশ কিছু ফ্ল্যাট রয়েছে গোপাল-হৈমন্তীর। সেগুলির সন্ধানে সিবিআইয়ের তরফ থেকে কলকাতা, মুম্বই সহ দেশের অন্য শহরের পুরসভাগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তদন্তকারীরা। কারণ, এখনও আইনি দৃষ্টিতে পলাতক অবস্থায় রয়েছেন গোপাল। খোঁজ মিলছে না হৈমন্তীরও। আর এঁরা একসঙ্গে বা আলাদা যে কোথাও গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা।
এদিকে সিবিআই সূত্রে আরও খবর, মুম্বইয়ের নরিম্যান পয়েন্টে একটি অফিসের সন্ধান মিলেছে। ওই অফিসটি মুম্বইয়ের এক ব্যবসায়ীর হলেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল হৈমন্তীর। হৈমন্তী প্রায়ই মুম্বই যেতেন। ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে গোপাল ও হৈমন্তীর ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল বলে তদন্তকারীদের ধারণা। কারণ, গোপালের অ্যাকাউন্ট থেকে যে ৬৮ লাখ টাকা মুম্বইয়ের ওই সংস্থায় সম্প্রতি গিয়েছে, সেই তথ্য এসেছে সিবিআইয়ের হাতে। এ ছাড়াও হৈমন্তী অ্যাগ্রোটেক নামে বিবাদি বাগের একটি সংস্থার মাধ্যমেই নিয়োগ দুর্নীতির বিপুল টাকা পাচার হয়েছে বলে সন্দেহ সিবিআইয়ের।