‘জাতীয় শিক্ষক সম্মান’ পাচ্ছেন হাওড়ার শিক্ষক চন্দন মিশ্র

‘জাতীয় শিক্ষক সন্মান’ রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পেতে চলেছেন নিশ্চিন্দা রঘুনাথপুর নফর অ্যাকাডেমির প্রধান শিক্ষক চন্দন মিশ্র। দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে বর্তমান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু তাঁর হতে জাতীয় শিক্ষকের পুরস্কার তুলে দেবেন।
২০২৩ সালের জাতীয় শিক্ষকের সম্মানে ভূষিত হলেন হাওড়ার নিশ্চিন্দা রঘুনাথপুর নফর একাডেমির প্রধান শিক্ষক চন্দন মিশ্র।
সারা দেশ থেকে বাছাই করা ৫০ জন শিক্ষকদের যে চূড়ান্ত তালিকা মনোনীত করা হয় তাদের মধ্যে কুড়ি নম্বর স্থানে রয়েছেন হাওড়ার এই শিক্ষক। চন্দন বাবু জানান, ‘আগামী ৩রা সেপ্টেম্বর আমাকে রাজধানীতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আগামী ৫ই সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি আমার হতে জাতীয় শিক্ষকের পুরস্কার তুলে দেবেন।’
জাতীয় শিক্ষকের সম্মান পাওয়াতে স্বভাবতই খুশির হাওয়া হাওড়া রঘুনাথপুর নফর অ্যাকাডেমি স্কুলে। একইভাবে আপ্লুত চন্দন মিশ্র বলেন, ‘ ২২ বছর আগে শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত হয়েছি। ২০২২ সালে রাজ্য সরকার আমাকে ‘শিক্ষারত্ন’ সম্মানে ভূষিত করেন। এবার জাতীয় সম্মানে আমি গর্বিত।’ আদতে উত্তর ২৪ পরগনার বরানগরের বাসিন্দা চন্দনবাবু তার শিক্ষকতার জীবন শুরু ২০০১ সাল থেকে। প্রথম প্রায় চার বছর শিক্ষকতা করেন কলকাতার খিদিরপুর একাডেমি স্কুলে।
সেখান থেকে বদলি হয়ে গ্রামীণ হাওড়ার বাগনান কুলগাছিয়ার কামিনা হাই স্কুলে আসেন। সেখানে প্রায় দশ বছর শিক্ষকতা করেন। চন্দনবাবু আরো বলেন, ‘ আমি অন্যান্য শিক্ষকদের মতোই একজন মানুষ গড়ার কারিগর। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আরো উন্নত করার যে স্বপ্ন আমি দেখি এই সম্মান আমাকে আগামী দিনে সেই কাজে আরও উৎসাহ দেবে।’
’শিক্ষকতা’ বিষয়ে বি.এড এবং পিএইচডি করেছেন ডঃ চন্দন মিশ্র। তিনি বরানগর রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম হাই স্কুল থেকে উত্তীর্ন হয়ে স্কটিশ চার্চ কলেজে স্নাতকস্তর অতিক্রম করেন। এরপর রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যলয়, ডেভিড হেয়ার ট্রেনিং কলেজ এবং কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষার স্তর উতীর্ণ করেন।

স্কুলের ইংরেজির সহ শিক্ষক প্রতাপ চন্দ্র দাস বলেন,’ এই সম্মানে তারা খুশি যদিও এই সন্মান উনি পাচ্ছেন, এতে তাদের দায়িত্ববোধ আরও বেড়ে গেল। সমাজের প্রতি যে দায়বদ্ধতা রয়েছে সেই সর্বোচ্চ সীমাকে লঙ্ঘন করে আরও ভালো কিছু করার চেষ্টা চালাতে হবে।’
স্কুলের অপর এক সহ শিক্ষক দীপ্ত নস্কর জানান,’ উনি এই স্কুলে আসার পড়ে থেকে স্কুলকে এক অনন্য মাত্রা দিয়েছেন। ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষকদের ও অশিক্ষক কর্মচারীদের একত্রিত করে তিনি তার পান্ডিত্ব ও মানবীয় চেতনার মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তার এই সন্মান শুধু তার একার নয় এটা এই এলাকার সকলের সন্মান। ‘
প্রধান শিক্ষকের এই সম্মানে খুশি অভিভাবকেরাও।
এক ছাত্রের অভিভাবক ঝন্টু সাহা বলেন,’ উনি এই স্কুলকে নিয়ম শৃঙ্খলার মাধ্যমে অনেক ভালো করেছেন। ওনার এই পুরস্কারের জন্য গর্ব বোধ হচ্ছে। আমার ছেলে এই এখন স্কুলের ছাত্র যার শিক্ষক রাষ্ট্রপতির হাতে জাতীয় শিক্ষকের মর্যাদা পেয়েছেন।’
উল্লেখ্য প্রতি বছরের মতই শিক্ষক দিবসে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের থেকে দেশের সেরা শিক্ষকদের সম্মানিত করা হয়। ২০২৩ সালে সারা দেশ থেকে ৫০ জন শ্রেষ্ঠ শিক্ষককে বেছে নেওয়া হয়েছে জাতীয় শিক্ষক সম্মানের জন্য ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

11 − 6 =