হাওড়া: শুক্রবার রাতে হাওড়ার কাজিপাড়ার ব্যবসায়ী হাজি তৈয়ব আলিকে খুনের ঘটনায়, দত্তক পুত্রকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করছে সম্পত্তি ও অর্থের জন্যই বাবাকে খুন করেছে ছেলে।
হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্তে নেমে সিকান্দার নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে জেরা করে মৃত ব্যবসায়ীর বড় ছেলে শেখ আফ্রিদি আলি ওরফে আকাশের নাম উঠে আসে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেপ্তার করা হয়, জানিয়েছেন হাওড়া সিটি পুলিশের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (সেন্ট্রাল )।তিনি জানান, এই দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও অন্য কেউ যুক্ত আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হবে। মূলত সম্পত্তি ও অর্থের জন্যই এই খুন করা হয়েছে। আকাশ ওরফে শেখ আফ্রিদি ঠান্ডা মাথায় এই খুনের পরিকল্পনা করেছে বলেই পুলিশ জানিয়েছে।
শুক্রবার রাতে কলকাতায় দোকান বন্ধ করে শিবপুরের কাজিপাড়া এলাকায় এসেছিলেন তৈয়ব আলি। দীনবন্ধু কলেজের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময়ই কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁর পথ আটকে দাঁড়ায় এবং কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁর উপর চপার নিয়ে হামলা চালায়। একেবারে অতর্কিতে তৈয়ব আলির মাথায় চপারের কোপ দেয় দুষ্কৃতীরা। সঙ্গে সঙ্গে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন তিনি। তারপর আশপাশের লোকজন ছুটে এলে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে শিবপুর থানার পুলিশ। দ্রুত গুরুতর জখম ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাওড়ার বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। পরে ওই হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়। হাওড়ার ৬১ নম্বর কাজিপাড়া লেনের একটি আবাসনে ফ্ল্যাটের বাসিন্দা ছিলেন ওই ব্যবসায়ী । চাঁদনিতে তাঁর ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীর ব্যবসা আছে।
ঘটনার তদন্তত এগোতেই পুলিশ জানতে পারে, মৃত ব্যবসায়ীর ছেলে আকাশের বিলাসবহুল জীবনযাপনের জন্য বাজারে অনেক ধার হয়েছিল। টাকা শোধ করার চাপও ছিল তার ওপরে। তাছাড়া জানা গিয়েছে, ব্যবসায়ীর প্রথম বিয়েতে কোনও সন্তান হয়নি। সেই সময় এক ছেলেকে তিনি দত্তক নেন। দ্বিতীয় বিয়ের পর তাঁর একটি পুত্রসন্তান হয়। সম্পত্তি নিয়ে গন্ডগোলের জেরেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে পুলিশ সূত্রে।
সিকান্দারকে আকাশই হাজি তৈয়ব আলিকে খুন করার জন্য বলে। খুঁটিনাটি সব তথ্য সেই দিয়েছিল। আবাসনের ভেতরে ও বাইরে সিসিটিভি ক্যামেরা সামলে যাতে নিপুনভাবে এই কাজ করা যায় তাঁর পরিকল্পনা করেছিল সে। যদিও তদন্তের স্বার্থে এর বেশি তথ্য সামনে আনতে চায়নি পুলিশ।