নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঁকুড়া: পানীয় জল যেখানে মানুষের জীবনের একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ,সেখানে দীর্ঘ ২০-৩০ বছর ধরে পানীয় জলহীন একটা গোটা গ্রাম। গ্রামের শিশু থেকে বয়স্ক, নারী থেকে পুরুষ সবাইকার হাহাকার শুধু একটু পানীয় জলের জন্য। চিত্রটা বাঁকুড়া ২ নম্বর ব্লকের মানকানালি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত লাপুড়িয়া গ্রামের। বাঁকুড়া শহরের কোলাহল ছাড়িয়ে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে শান্ত এক গ্রাম লাপুড়িয়া। যেখানে সারিবদ্ধ ভাবে ৪০০ থেকে ৫০০ পরিবারের বাস। দিনের শেষে গ্রামের বাসিন্দাদের একটাই চিন্তা পানীয় জলের সংস্থান।
এমনিতেই লালমাটির জেলা বাঁকুড়া খরাপ্রবণ, তার ওপর দোসর ভরা গ্রীষ্ম। রোজনামচার পানীয় জলের সংস্থান করতে গ্রামবাসীদের পায়ে হেঁটে যেতে হয় প্রায় দুই থেকে আড়াই কিলোমিটার রাস্তা, পানীয় জল সরবরাহ করতে যথেষ্ট বেগও পোহাতে হয়। বিষয়টি একাধিকবার একাধিক প্রশাসনিক স্তরে লিখিত আকারে জানালেও, শুধু মিলেছে আশ্বাস, কাজের কাজ কিছুই হয়নি বলেইz অভিযোগ গ্রামবাসীদের। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, বাড়িতে বাড়িতে পানীয় জলের কল বসলেও, সেখানে দেখা নেই জলের।
গ্রামবাসীদের দাবি, পঞ্চায়েত ভোটের পূর্বে ট্যাংকারে করে পানীয় জলের সরবরাহ করলেও ভোট মিটে যেতে আর তারও দেখা নেই। সামনেই লোকসভা ভোট আসন্ন এখন ভোট চাইতে মানুষের দরজায় দরজায় পৌঁছে যাচ্ছে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। ভোটের পূর্বে যদি পানীয় জলের সংস্থান না হয় তা হলে ভোটদান থেকে গ্রামবাসীরা বিরত থাকবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
গ্রামবাসীরা যাঁরা আজ ২০-৩০ বছর ধরে এই সমস্যা ভোগ করে আসছেন, তাঁরা দাবি করেন, ভোটের পূর্বে হয়তো আগের ভোটের মতোই ট্যাংকারে করে পানীয় জলে সরবরাহ করা হবে, এবারে তা চলবে না। স্থায়ী একটা বন্দোবস্ত না হলে পুরো গ্রাম ভোটদান থেকে বিরত থাকবে। রাজনীতির বেড়াজাল থেকে বাইরে বেরিয়ে এসে গ্রামবাসীদের দাবি, সুষ্ঠু ভাবে পানীয় জলের সরবরাহ। তাঁদের বাপ ঠাকুরদাদার আমল থেকে পানীয় জলের সমস্যা থেকে স্থায়ী ভাবে অব্যাহতির জন্য কাতর আর্জি জানাচ্ছেন তাঁরা। লোকসভা ভোটের আগে পানীয় জলের সমস্যা থেকে গ্রামবাসীরা মুক্তি পায় কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়।