ব্যাটার ওড়াচ্ছেন প্রতিপক্ষ টিমের বোলারের ঘুম। কখনও আবার বোলার তুলে নিচ্ছেন একের পর এক উইকেট। এ সব দৃশ্য যে কোনও ক্রিকেট ম্যাচে বেশ পরিচিত। আর এমন কিছু হলেই কমেন্ট্রি বক্সে ওঠে তুফান। মাঠে ঝড় বইয়ে দেন ক্রিকেটাররা। আর তাঁদের খেলা দেখে শব্দের ঝড় তোলেন কম বক্সে থাকা বিশেষজ্ঞরা। একটি ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালীন প্রতি মুহূর্তে দর্শকদের জন্য খেলার খুঁটিনাটি বিবরণ তুলে ধরেন ধারাভাষ্যকাররা। এমন অনেক বিশেষজ্ঞ, প্রাক্তন ক্রিকেটাররা ধারাভাষ্যের সঙ্গে আজকাল যুক্ত, যে তাঁদের গলার স্বর শোনার জন্য বহু দর্শক টেলিভিশনের সামনে বসে পড়েন। আইপিএলেও দুরন্ত মেজাজে ধারাভাষ্য দিচ্ছেন প্রচুর প্রাক্তন ক্রিকেটার থেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞরা। সুনীল গাভাসকর, রবি শাস্ত্রী থেকে শুরু করে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, সচিন তেন্ডুলকর, রিকি পন্টিং, ম্যাথু হেডেনরা ধারাভাষ্য দেন। কম বক্সে নিপুণ ভাবে ক্রিকেট ম্যাচের নানা খুঁটিনাটি তথ্য তুলে ধরার ফলে প্রাক্তন ক্রিকেটার থেকে শুরু করে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা বেশ ভালো বেতন পান। জানেন এক একটি ম্যাচে ধারাভাষ্য দেওয়ার জন্য কত টাকা পান ধারাভাষ্যকাররা?
২২ গজে সেই অর্থে লম্বা ইনিংস না খেলতে পারলেও দেশের প্রাক্তন ক্রিকেটার আকাশ চোপড়া ধারাভাষ্য জগতে বেশ জনপ্রিয়। এক পডকাস্টে ক্রিকেট সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে কথোপকথনের সময় আকাশের সামনে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল যে, এক জুনিয়র ধারাভাষ্যকার ও এক সিনিয়র ধারাভাষ্যকার কত বেতন পান? সেই প্রশ্নের উত্তরে আকাশ জানান, প্রতি ম্যাচে ধারাভাষ্যকারদের বেতন আলাদা আলাদা হয়। জুনিয়র ধারাভাষ্যকাররা প্রতিদিন প্রায় ৩৫-৪০ হাজার টাকা পান। অপরদিকে অভিজ্ঞ ধারাভাষ্যকাররা একদিন ধারাভাষ্য দেওয়ার জন্য পান প্রায় ৬-১০ লক্ষ টাকা। সেই সঙ্গে আকাশ এও জানান যে, সাধারণত একজন কমেন্টেটর ১০০দিন কমেন্ট্রি করে থাকেন। ফলে সেই হিসেব অনুযায়ী একজন ধারাভাষ্যকার এক বছরে ধারাভাষ্য থেকে ৬-১০ কোটি টাকা আয় করেন।
ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটারদের কথা বললে সুনীল গাভাসকর, রবি শাস্ত্রী, অনিল কুম্বলে থেকে শুরু করে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, সচিন তেন্ডুলকরদের দেখা গিয়েছে কম বক্সের হটসিটে। এই তালিকায় ইরফান পাঠান, মহম্মদ কাইফ, হরভজন সিংরাও রয়েছেন। সম্প্রতি শিখর ধাওয়ান, চেতেশ্বর পূজারাদের, অম্বাতি রায়ডুদেরও দেখা গিয়েছে ধারাভাষ্য দিতে। অনেক সময় ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সিরিজ অনুযায়ী চুক্তি করা হয়। এও জানা গিয়েছে যে, ধারাভাষ্যকারদের বেতন তাঁদের অভিজ্ঞতা, কথা বলার স্টাইল এই সবকিছুর উপরও মাঝে মাঝে নির্ভর করে।
এক ঝলকে দেখে নিন আইপিএলে ধারাভাষ্যের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজনের বেতন কত?
বিভিন্ন মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী রবি শাস্ত্রী আইপিএলে ধারাভাষ্য দিয়ে পান প্রায় ১ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকার কাছাকাছি।
সুনীল গাভাসকর আন্তর্জাতিক সিরিজের ধারাভাষ্যের জন্য পান প্রায় ৫৭ লক্ষ টাকা। এ ছাড়া আইপিএলে কমেন্ট্রি করার জন্য তিনি পান ২.৩৫ কোটি টাকা।
সঞ্জয় মঞ্জরেকরও প্রতি বছরে আইপিএল এবং আন্তর্জাতিক সিরিজ মিলিয়ে কমেন্ট্রি করার জন্য পান প্রায় ৬ কোটি টাকার কাছাকাছি। এক একটি আন্তর্জাতিক সিরিজে তাঁর আয় ৪২ লক্ষ টাকার কাছাকাছি।
ভারতীয় ক্রিকেটের জাম্বো অর্থাৎ অনিল কুম্বলে বার্ষিক ধারাভাষ্য থেকে উপার্জন করেন ৫.৫ কোটি টাকা। এক একটি আন্তর্জাতিক সিরিজে তিনি প্রায় ৩২ লক্ষ টাকার কাছাকাছি বেতন পান।
ক্রিকেট বিশ্বে বেশ জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার হর্ষ ভোগলে। তিনি দীর্ঘদিন ক্রিকেট প্রেমীদের মনে তাঁর ক্ষুরধার ক্রিকেট বিশ্লেষণের মাধ্যমে জায়গা করে নিয়েছেন। তাঁর প্রতি সিরিজে আয় প্রায় ৩২ লক্ষ টাকা। এবং বাৎসরিক ধারাভাষ্য থেকে তিনি প্রায় পান ৫.৫ কোটি টাকা।