যাদবপুর কাণ্ডে তদন্তের পাশাপাশি পুলিশের জেরায় প্রতিনিয়তই সামনে আসছে নয়া নয়া তথ্য। যা চাঞ্চল্যকরও বটে। এবার হস্টেলে প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রকে ব়্যাগিং নিয়ে আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল প্রকাশ্যে। অভিযোগ, সমকামী বলে উত্যক্ত করা হত তাকে। আর সে যে সমকামী নয় তার প্রমাণ দিতেও বলা হয় তার জন্য লুকিয়ে কোনও ছাত্রীর ছবি তোলা ও সিনিয়রদের নামের পাশে গালিগালাজ লিখে চিৎকার করে তা বলার জন্যও মানসিক চাপ তৈরি করা হতো।
প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই হস্টেলে তোলাবাজির অভিযোগ সামনে এসেছে। যাদবপুর মেইন হস্টেলে সিনিয়র ও প্রাক্তন ছাত্রদের একাংশের বিরুদ্ধে উঠেছে এমনই গুরুতর অভিযোগ। সরাসরি ‘রেটকার্ড’ তৈর করে হস্টেলে তোলাবাজি চলত বলে অভিযোগ উঠছে। টাকা তোলা হত হস্টেলে থাকতে আসা নবাগত পড়ুয়াদের থেকে। সূত্রের খবর, পরিবারের রোজগার দেখে তৈরি হত ওই তালিকা বা ‘রেটকার্ড’। সেই তালিকাতেই লেখা থাকত, কোন পরিবারের থেকে কত টাকা করে নেওয়া হবে। আর সমস্ত টাকাই নেওয়া হত অনলাইন অ্যাপের সাহায্যে। টাকা ঢুকলেই শুরু হত দাদাদের তথা ‘হস্টেল বাপ’দের আমোদ প্রমোদ ফূর্তি। এই তোলা আদায়ের আগে নবাগতরা হস্টেলে পা রাখার পরই তাঁদের পারিবারিক খোঁজখবর বা ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড জেনে নেওয়া হত। আর যে পড়ুয়ার পরিবার যত বেশি স্বচ্ছল, তাঁর থেকে টাকা তত বেশি টাকা চাওয়া হতো বলেই সূত্রে খবর। এদিকে একইসঙ্গে তৈরি করা হত নবাগতদের তালিকা। সেই তালিকাতেই থাকত, কার পরিবার থেকে কত টাকা করে চাওয়া হবে, সেই অঙ্ক। এমনকী টাকা না দিলে হস্টেলে থাকতে দেওয়া হবে না বলেও হুমিক দেওয়া হত।
এদিকে এই ঘটনায় আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতের নাম জয়দীপ ঘোষ। এই নিয়ে ঘটনায় গ্রেফতারির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৩। জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামে জয়দীপ ঘোষের বাড়ি। ২০২১ সালে ইন্টারন্যাশানাল রিলেশনশিপ নিয়ে যাদবপুর থেকে পাশ করে জয়দীপ। যাদবপুরের বিক্রমগড় এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকত সে। কিন্তু, তারপরেও প্রায়শই যাদবপুর হস্টেলে থাকতে দেখা যেত তাকে। অভিযোগ, ঘটনার দিন রাতে জয়দীপ কয়েকজনকে নিয়ে হস্টেলের গেট বন্ধ করে দেয়। রাতে ক্যাম্পাসে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় পুলিশকে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, এখনও পর্যন্ত যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা ছাড়াও ঘটনায় আরও অনেকে যুক্ত থাকতে পারে। তাদের খোঁজেই ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।