হুক্কাবার বন্ধ করার নির্দেশ কলকাতা পুরসভার

কলকাতা: ‘মানুষের ক্ষতি হচ্ছে’, সেই কারণেই কলকাতায় হুক্কা বারগুলি বন্ধ করার অনুরোধ জানালেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। শুক্রবার কলকাতা পুরসভায় ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠান চলাকালীন এমনটাই বলতে শোনা যায় তাঁকে। শহরের মহানাগরিক এও জানান, ‘এখন কলকাতায় হুক্কাবার বন্ধ করার অনুরোধ করছি। বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় যে হুক্কা বার চলে এটা খারাপ বিষয়। হুক্কাবারে যে ধোঁয়া ব্যবহার করা হচ্ছে তা অত্যন্ত খারাপ। দ্বিতীয়ত, কোনও কোনও জায়গায় এর সঙ্গে নেশার জিনিস মেশানো হচ্ছে। ফলে তাঁরা বারবার হুক্কাবারে যেতে বাধ্য হচ্ছে। এটা এমন বড় ব্যবসা হয়ে দাঁড়িয়েছে যে মানুষের ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। সেজন্য হুক্কা বারকে আর পুরসভা লাইসেন্স দেবে না।’ এরই রেশ টেনে ফিরহাদ হাকিম আরও জানান, ‘যাদের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে তাদেরও লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়া হবে। এই বিষয়ে দ্রুত নোটিফিকেশন দেওয়া হবে। এই বিষয়ে পুলিশের সাহায্য চাইব। যাঁরা হুক্কা বার চালাচ্ছেন তাঁদের কাছে অনুরোধ যেন বন্ধ করেন। রেস্তোরাঁ চালালে আমাদের আপত্তি নেই। খাওয়া দাওয়া হোক।’ পাশাপাশি এদিন মেয়র ফিরহাদ এও জানান, ‘হুক্কা বারের কোনও লাইসেন্সিং নেই। অনেকেই এটি ‘প্লেজার স্মোকিং’ হিসেবে নেয়। প্রতিনিয়ত এই ধোঁয়া নিলে তা ফুসফুসে প্রভাব ফেলছে। কলকাতাবাসীরজন্যও তা ঠিক নয়। অনেক অভিযোগ বিভিন্ন জায়গা থেকে আমরা পেয়েছি। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি তা বন্ধ করে দেব।’ এদিকে শহরের একাধিক দোকানে খোলাভাবেই বিক্রি করা হয় হুক্কা। এবার থেকে সেই দোকানগুলির উপরেও নজর চালাবে কলকাতা পুরসভা, এদিন এমনও নির্দেশ দিতে দেখা যায় কলকাতার মেয়রকে।

তবে এই ঘটনায় সমাজের সর্বস্তরের ধারনা, আসলে হুক্কা বারে ভিড় জমান কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই সেই হুক্কার সঙ্গে মাদক বা ড্রাগ মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে যুবসমাজ। গত বেশ কয়েকদিন ধরেই এই অভিযোগ আসছে পুরসভায়। এবার তা বন্ধ করেতই এই ভাবে এক শক্ত পদক্ষেপ নিতে বাধায হল কলকাতা পুরসভা।

এদিন হুক্কা বার প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম এও জানান, ‘আগে সিগারেট খাওয়ার ক্ষতিকারক দিকগুলি নিয়ে সাধারণ মানুষ সচেতন ছিল না। যদিও এখন তা বদলেছে।’ তবে কোনও রেস্তোরাঁ যদি কলকাতা পুরসভার নির্দেশ উড়িয়ে হুক্কা বিক্রি করে সেক্ষেত্রে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে কিনা সেই প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম জানান, এখনই তিনি এতটা কড়া হচ্ছেন না। তবে পুলিশ যাতে এই বিষয়ে কড়া হন তা দেখার কথা বলেছেন মহানাগরিক। পুরো বিষয়টিই আপাতত ‘অনুরোধ পর্ব’-এ রয়েছে। তবে ভবিষ্যতে এই বিষয়ে যে কড়া পদক্ষেপ করবে কলকাতা পুরসভা সে ব্যাপারে নিশ্চিত করেন তিনি।

এরই পাশাপাশি এদিন মেয়র এও জানান, কলকাতায় বিভিন্ন বার ও রেস্তোরাঁয় খাবারের গুণমান কেমন হচ্ছে, সে বিষয়ে নজরদারি করা হবে। কোনও অনিয়ম, বেনিয়ম হচ্ছে কি না, তাও খতিয়ে দেখতে একটি দল পাঠানো হবে পুরসভার তরফে। প্রসঙ্গত, কলকাতার রেস্তোরাঁয় খাবারের মান নিয়ে একাধিক অভিযোগ এসে পৌঁছেছে পুরসভার কাছে। অনেক সময় রেস্তোরাঁয় কর্মীদের অভব্য আচরণেও বিরক্ত হয়েছেন অনেকে। আর এখানেও শক্ত পদক্ষের করতে চায় কলকাতা পুরসভা যাতে ভোজনরসিকদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

six − five =